সোহেল রানার পিতা-মাতার কাটছে অনিশ্চয়তার প্রহর : হাসিবুলকে নিয়ে পুলিশের প্রশ্ন

চুয়াডাঙ্গা দশমর ইটভাটা মালিকের ছেলে অপহরণের ৮৫ দিন : বোয়ালিয়ার হাসি নিখোঁজের ১৫ দিন অতিবাহিত

 

আলম আশরাফ: চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জ ইটভাটা মালিকের ছেলে সোহেল অপহরণের ৮৫ দিন অতিবাহিত হলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। ফলে তার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে তাও এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। অপরদিকে সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়ার বিএনপি নেতা হাসিবুল ইসলাম হাসি সত্যি অপহরণ হয়েছে নাকি আত্মগোপন করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন দানা বেধেছে। ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও তার সম্পর্কে সুস্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি পুলিশ।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরে কুতুবপুর ইউনিয়নের বদরগঞ্জ দশমী গ্রামের আব্দুল বারী নয়মাইলে অবস্থিত একতা ইটভাটা মালিক। তারই ছেলে সোহেল। সোহেল গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর বদরগঞ্জ বাজার থেকে ব্যাডমিন্টন ফেলে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণ করা হয় বলে তার পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত হয়েছেন। অপহরণের পর মোবাইলফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয় বলেও জোর গুঞ্জন ওঠে। সোহেলকে ফিরে পেতে গোপনে মুক্তিপণের টাকা দেয়া হয়েছিলো বলে এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে। তারপরও মুক্তি মেলেনি। পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে নানা মুখি তৎপরতা শুরু করলেও সুফল মেলেনি। সোহেল রানার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত কী ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তার পিতা-মাতা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। পুলিশ সোহেল রানার প্রথম স্ত্রীপক্ষের সাথে বিরোধসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্য নিয়ে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

অপরদিকে সরোজগঞ্জ বোয়ালিয়া গ্রামের মোবারক মণ্ডলের ছেলে স্থানীয় বিএনপি নেতা হাসিবুল ইসলাম হাসি গত ২১ মার্চ রাতে কালীগঞ্জে আলু বিক্রি করে ফেরার পথে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। তার কাছে থাকা মোটরসাইকেল, চশমা গ্রামেরই পুজো মণ্ডপের কাছ থেকে পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে অপহরণ নাকি আত্মগোপন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, হাসি গত ১৭ মার্চ বাড়ি থেকে আলু বিক্রি করার জন্য ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ যান। আলু বিক্রি শেষে করে ২১ মার্চ রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি বোয়ালিয়া ফিরছিলেন। রাতে বাড়িতে না ফেরায় তার মোবাইলফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। এ সময় তার মোবাইলফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের ধারণা হয়তো বা মোবাইলে চার্জ নেই বাড়ি ফিরে আসবে। পরে ভোরের দিকে গ্রামের লোকজন হাসিবুলের মোটরসাইকেল গ্রামের পূজোতলায় পড়ে থাকতে দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেন। পরে  নিশ্চিত হয় তাকে অপহরণ করা হয়েছে। পুলিশ হাসিবুলকে উদ্ধার করতে অভিযান জোরদার করে। শেষ পর্যন্ত ১৫ দিন পার হলেও হাসিবুলকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

হাসিবুল হাসি এলাকায় ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় আলু বিক্রির তিন লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেছে নাকি সত্যিই অপহরণকারীদের কবলে পড়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।