চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ

ঘোর দুশ্চিন্তায় কারিগরি বোর্ডের ১ লাখ পরীক্ষার্থী : সৃজনশীল প্রশিক্ষণ পেয়েছে ৩ দিন

 

স্টাফ রিপোর্টার: আজ শুরু হচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা। শুরু হতে যাওয়া পরীক্ষায় কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অংশ নিচ্ছে এক লাখের বেশি শিক্ষার্থী। এসব পরীক্ষার্থীর ৫টি বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতির আলোকে পরীক্ষা দিতে হবে। অথচ এসব বিষয়ে সৃজনশীলের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীরা পায়নি। চুয়াডাঙ্গায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এবার ৯ হাজার ৪১১ জন, মেহেরপুরে ১ লাখ ৭০ হাজার ১১০ জন। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।

দেশব্যাপি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় একযোগে শুরু হচ্ছে। দেশের দশটি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ বছর ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। গত বছর এ পরীক্ষায় ১০ লাখ ১২ হাজার ৫৮১ জন অংশ নিয়েছিলো। সে হিসাবে এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ৭৯৩ জন। এবার মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬ লাখ ৬ হাজার ২৯৩ জন ছাত্র এবং ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮১ জন ছাত্রী। এ বছরও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এক্ষেত্রে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরতদের শ্রুতিলেখক নিযুক্ত করা যাবে। শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী, বুদ্ধি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা অন্য সময়ের মতো এবারও অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে।

পরীক্ষা শুরু উপলক্ষে গতকাল বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এসব তথ্য জানান। তথ্য অনুযায়ী, এবার মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে ৯ লাখ ২৪ হাজার ১৭১, মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ১ লাখ ৭ হাজার ৫৫৭, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম/ভোকেশনালে ১ লাখ ৪ হাজার ৬৬৯ ও ডিআইবিএসে ৪ হাজার ৯৭৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। ঢাকার বাইরে এবার বিদেশের পাঁচটি কেন্দ্রে ২০২ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে। এর মধ্যে ৯১ জন ছাত্র এবং ১১১ জন ছাত্রী।

চুয়াডাঙ্গায় এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ৯ হাজার ৪১১ জন অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে এইচএসসিতে ৭ হাজার ৭৪৯, আলিম পরীক্ষায় ৫৭১, এইচসএসসি ভোকেশনালে ১২৪ ও এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৯৬৭ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার ২০টিসহ ২১টি কলেজের শিক্ষার্থী এবার মোট ১১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ১ হাজার ১৩৬ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজ কেন্দ্রে। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের ৫৫৯, ডা. আফছার উদ্দিন কলেজের ১১২ ও সরোজগঞ্জের তেতুল শেখ কলেজের ৮৩ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেবে। দর্শনা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে দামুড়হুদার ওদুদ শাহ কলেজের ৫৯০ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে কুষ্টিয়ার শঙ্করদিয়া আদর্শ কলেজের ৮১ জনসহ আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজের ২৯৭, খাসকররা মহাবিদ্যালয়ের ১২৭, নিগার-সিদ্দিক কলেজের ২১৪ ও জামজামি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। জীবননগর আদর্শ মহিলা কলেজের ১৬৫, উথলী কলেজের ১৭৬ ও আন্দুলবাড়িয়া কলেজের ১৯৬ ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে। চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের ৫২৬ ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে সরকারি মহিলা কলেজে। দর্শনা সরকারি কলেজের ৮৪০ ও কার্পাসডাঙ্গা মহাবিদ্যালয়ের ৩৫৩ জন ছাত্র-ছাত্রী দামুড়হুদার ওদুদ শাহ কলেজে পরীক্ষা দেবে। হারদীর এমএস জোহা কলেজের ৪১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে। জীবননগর ডিগ্রি কলেজের ৫৯৬ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে জীবননগর আদর্শ মহিলা কলেজে। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের ৮৪৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে হারদীর এমএস জোহা কলেজ কেন্দ্রে। বড় সলুয়া নিউ মডেল কলেজের ১৭৬ জন শিক্ষার্থী বদরগঞ্জ কলেজে এবং বদরগঞ্জ কলেজের ২৪৫ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দেবে ভেন্যু কেন্দ্র বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ কামিল মাদরাসায়।

চুয়াডাঙ্গার ১০টি মাদরাসার ৫৭১ জন এ বছর আলিম পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। জেলায় ৩টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থী অংশ নেবে। চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা, বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ কামিল মাদরাসা, দর্শনা ফাজিল মাদরাসা ও কার্পাসডাঙ্গা ফাজিল মারাসার ৩১১ জন ছাত্র-ছাত্রী চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে অংশ নেবে। আলমডাঙ্গা আলিম মাদরাসা, কাবিলনগর আলিম মাদরাসা, নওলামারী আলিম মাদরাসা ও ওসমানপুর প্রাগপুর ফাজিল মাদরাসার ১০১ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশ নেবে আলমডাঙ্গা আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে। জীবননগর আলিম মাদরাসা ও হাসাদাহ ফাজিল মাদরাসার ১৫৯ জন পরীক্ষা দেবে জীবননগর আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে।

এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গা টেকনিকেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৪ জন পরীক্ষা দেবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে।

এ ছাড়া এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা পরীক্ষা জেলার  ৫টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজের ১২২ জন পরীক্ষা দেবে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে। নিগার সিদ্দিক কলেজের ৩০৬ জন আলমডাঙ্গা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। এমএস জোহা কলেজের ৩১৩ জন অংশ নেবে মীর সামসুল ইসলাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে। আব্দুল ওদুদ শাহ ডিগ্রি কলেজের ১৪১ জন অংশ নেবে দামুড়হুদা পাইলট গার্লস স্কুল ও কলেজে এবং জীবননগর আদর্শ মহিলা কলেজের ৮৫ জন পরীক্ষা দেবে জীবননগর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর জেলায় এবারে এইচএসসি পরীক্ষায় ৩ হাজার ৫৯৯, এইচএসসি ব্যবসা ব্যবস্থাপনা ১ হাজার ৩৫২, এইচএসসি ভোকেশনাল ১৬৫ এবং ১৫৯ জন আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে বলে শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে। সকাল দশটা থেকে একটানা পরীক্ষা চলবে দুপুর একটা পর্যন্ত।

মেহেরপুর সরকারি কলেজ, মেহেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, মেহেরপুর পৌর কলেজ, গাংনী ডিগ্রি কলেজ, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ, গাংনী মহিলা কলেজ ও বামন্দী-নিশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বামন্দী-নিশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের অতিরিক্ত ভেন্যু বামন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অতিরিক্ত ভেন্যু দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

ব্যবসা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র হচ্ছে মেহেরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিএম কলেজ, সরকারি টেকনিকেল স্কুল ও কলেজ, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ, গাংনী সন্ধানী স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ। দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের অতিরিক্ত ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এইচএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে মেহেরপুর সরকারি টেকনিকেল স্কুল ও কলেজে। অতিরিক্ত ভেন্যু মেহেরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিএম কলেজ। আলিম পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে দারুল উলুম আহমদীয়া ফাজিল মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হবে।

কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষার্থীরা যাতে ফেল না করে সে লক্ষ্যে তাদের সীমিত আকারে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কারিগরি শিক্ষাবোর্ড। প্রশিক্ষণ প্রয়োজন ১২ দিনের। অথচ কারিগরি বোর্ডের প্রশিক্ষণ পেয়েছে ৩ দিনের। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা বলছেন, ফেল করার হাত থেকে বেঁচে যাবে শিক্ষার্থীরা। তবে ভালো ফল নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা।

শঙ্কার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদান, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা নেই। তবুও তারা পড়িয়েছেন, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং উত্তরপত্র মূল্যায়ন করছেন। শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা না নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নেবে। যে কারণে তারা ভালো ফল করতে পারবে না।

এরই প্রেক্ষাপটে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবুল কাশেম মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়েছেন। অধ্যাপক আবুল কাশেম সাংবাদিকদের বলেছেন, এর আগে শিক্ষাসচিবকে কারিগরি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয় বারবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু শিক্ষকদের কারিগরির শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। প্রশিক্ষণ দেয়া বোর্ডের কাজ নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারিগরি শিক্ষার্থীরা যাতে পিছিয়ে না পড়ে সে কারণে বোর্ডের অর্থায়নে তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও মাদরাসার শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পেলেও কারিগরি শিক্ষার্থীরা প্রশিক্ষণ পাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতায় এসএসসি ভোকেশনাল, এইচএসসি ভোকেশনাল এবং এইচএসসি ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় (বিএম) অন্যান্য বোর্ডের ন্যায় সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়। তথ্যানুযায়ী, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতাধীন ৩ হাজার ৮৮০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে এসএসসি ভোকেশনালে ২ হাজার ১৯৭টি, এইচএসসি ভোকেশনালে ৬৪টি এবং এইচএসসি (বিএম) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ১ হাজার ৬১৯টি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রয়েছে ২৫ হাজার।

তথ্য অনুযায়ী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) প্রকল্প এসইএসডিপির মাধ্যমে সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পটি মূলত মাউশির। সাধারণ ও মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড একই। কিন্তু কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের পৃথক অধিদপ্তর রয়েছে। এ কারণে মাউশির এই প্রকল্পে কারিগরি শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের উদাসীনতা ও সমন্বয়হীনতা ছিলো। মন্ত্রণালয় আন্তরিক হলে এতোদিনে কারিগরির সব শিক্ষককের প্রশিক্ষণ শেষ হতো।

এর আগে সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণ না দিয়েই ২০১৩ শিক্ষাবর্ষে সাধারণ শিক্ষায় নবম শ্রেণির গণিত বিষয়ে চালু হয় সৃজনশীল পদ্ধতি। ফলে প্রশিক্ষণ না পাওয়া দুর্বল শিক্ষকরা অনুমান করে শ্রেণিকক্ষে সৃজনশীল পদ্ধতিতে গণিত পড়িয়েছেন, নবম শ্রেণির অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন প্রণয়ন করেছেন। প্রশিক্ষণ না নিয়ে এভাবে শিক্ষাদান ও প্রশ্নপ্রণয়ন করার ফলে ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া এইসব শিক্ষার্থীদের ফল বিপর্যয় হতে পারে-এমন আশঙ্কা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

উচ্চ মাধ্যমিকে ২০১২ সালে শুধু বাংলা ১ম পত্রের সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ২০১৩ সালে বাংলা ১ম পত্রসহ মোট ৭টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর বাংলা ১ম পত্র, রসায়ন, পৌরনীতি, ব্যবসায়নীতি ও প্রয়োগ, জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবসায় উদ্যোগ ও ব্যবহারিক ব্যবস্থাপনা, সমাজবিজ্ঞান, সমাজকল্যাণ এবং কম্পিউটার শিক্ষা ১ম ও ২য় পত্রে মোট ২৫টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আজ শুরু হওয়া এইচএসসি ভোকেশনাল ও এইচএসসি-বিএমেও থাকছে সৃজনশীল পদ্ধতি। এর মধ্যে এইচএসসি-বিএমে বাংলা-১, ডিপ্লোমা-ইন-কমার্সে বাংলা-১ এবং এইচএসসি ভোকেশনালে বাংলা, পদার্থ ও রসায়নের ৫টি পত্রে থাকছে সৃজনশীল পদ্ধতি। সাধারণ ও মাদরাসা শিক্ষকদের বড় একটি অংশ প্রশিক্ষণ পেলেও কারিগরির শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পাননি।

আওয়ামী লীগের গত শাসনামলে ২০০৯ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তরে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি থেকে গণিতেও এ পদ্ধতি কার্যকর করা হয়। চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষায় অন্যান্য বিষয়ের মতো গণিতের পরীক্ষাও হয় সৃজনশীল পদ্ধতিতে। এছাড়া ২০১৫ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় গণিত, উচ্চতর গণিত এবং ২০১৭ সালের এইচএসসি ও আলিম পরীক্ষায় উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষা এ নিয়মে হবে।

Leave a comment