গাংনীর দিঘলকান্দি-কচুইখালী গ্রামবাসীর মধ্যে গোরস্তানের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ : আহত ৪০

 

গাংনী/বারাদি প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার দিঘলকান্দি ও কচুইখালী গ্রামবাসীর মধ্যে গোরস্তানের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় গ্রামের অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল রোববার সকাল ৮টার দিকে গোরস্তানের সন্নিকটে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, দিঘলকান্দি ও কচুইখালী পাশাপাশি দুটি গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন থেকেই একই গোরস্তানে মরদেহ দাফনকাজ করে আসছিলেন। এ নিয়ে মাঝে মধ্যে দু গ্রামের মানুষের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হলে কচুইখালী গ্রামের মানুষ বেশ কিছুদিন আগে আলাদা একটি গোরস্তান তৈরি করেন। সম্প্রতি পুরাতন গোরস্তানের কিছু গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেয় দিঘলকান্দি গ্রামবাসী। এতে কচুইখালী গ্রামবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যেহেতু দু গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় গোরস্তান তৈরি হয় তাই কচুইখালী গ্রামের মানুষ গাছের ভাগ দাবি করেন। এ নিয়ে উভয় গ্রামের মানুষের মাঝে দেনদরবার ও উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। গতকাল সকালে কচুইখালী গ্রামের কয়েক শ’ মানুষ দিঘলকান্দি গোরস্তানে গিয়ে লাল পতাকা টাঙিয়ে নিজেদের অংশ চিহ্নিত করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দিঘলকান্দি গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে প্রতিরোধ করেন। এতে দু গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে উভয় গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সংঘর্ষে কচুইখালী গ্রামের মোজাম্মেল হোসেন (৪০), মন্টু মিয়া (৪২), আবু তাহের (৫৫), মজিবর রহমান (৪০), সাখাওয়াত হোসেন (৪৫), সুফল হোসেন (২৭), ইসমাইল হোসেন (৩৫), আহম্মদ আলী (৫০), সকমান আলী (৪৫), মুনছুর আলী (৪০), হাসিবুল ইসলাম (২০) ও নাহিদুর রহমানকে (২৫) গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসেন (৪০) ও মন্টু মিয়াকে (৪২) আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

অপরদিকে দিঘলকান্দি গ্রামের ফরজ আলী (৪৭), সাহাদ আলী (৫০) মুছা করিম (৫১), ইয়ার আলী (৫৫), শামীম হোসেন (২৫), রিয়াজুল ইসলাম (৫০), জহুরুল ইসলাম (২৫), কামাল হোসেন (৩০), ইউসুফ আলী (৩৫), সোহেল রানা (৩০) ও নুর জামালকে (৩৫) মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে সদর ও গাংনী থানা পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাছুদুল আলম জানিয়েছেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। নাশকতা এড়াতে ওই এলাকায় দুপুর পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন ছিলো। আগামী ২ এপ্রিল উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে বসে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামের মানুষ। গতকালের ঘটনায় কোনো পক্ষই থানায় মামলা কিংবা অভিযোগ করেননি।