চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আর মাত্র ৩ দিন বাকি

 

 

প্রতিদ্বন্দ্বীদের জোর প্রচার প্রচারণা : সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ৩১ মার্চ। আর মাত্র ৩ দিন পরই ভোট। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। মহল্লায় মহল্লায় নির্বাচনী পথসভা নিয়েও ব্যস্ত প্রার্থীসহ তাদের দলীয় নেতাকর্মীরা। নির্বাচন যতোই এগিয়ে আসছে ততোই শঙ্কিত হচ্ছে একপক্ষ। চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও কি জীবনননগরের মতো ভোট ডাকাতি হবে? এ প্রশ্ন জোরদার হয়ে উঠলেও চুয়াডাঙ্গা সদরে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় কর্মীরা সহাসে বুক বেধে জোর প্রচার প্রচারণায় মাঠে রয়েছেন। আলমডাঙ্গায় বিএনপির দু পক্ষের দু প্রার্থী প্রচারণায় রয়েছেন, আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী। জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থীও ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী নেতাকর্মীদের মাঝে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ সমর্থিত আশাদুল হক বিশ্বাস। তার প্রতীক আনারস। বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মামুন অর রশীদ এবার চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া মার্কা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। তিনি আওয়ামী লীগ ঘোরনার বলে কেউ কেউ মন্তব্য করলেও তিনি কোনো দলের পরিচয় ছাড়াই মাঠ চষছেন। বিএনপির ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৪ জন বিএনপি নেতা মজিবুল হক মালিককে সমর্থন দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মজিবুল হক মালিক মজু চিংড়ি মাছ প্রতীক নিয়ে শুরু থেকে জোর প্রচারণার পাশাপাশি ৪ জনের সমর্থন নিয়ে বিএনপি নেতা কর্মীদের এক কাতারে দাঁড় করানোর প্রেক্ষিতে দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকদের মাঝে আশার আলো জাগিয়েছেন। যদিও দিন গড়ানোর সাথে সাথে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে নানা শঙ্কা দানা বাধছে। নেতাকর্মীদের অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছেন, ঐক্যবদ্ধই মূল সাহস। ভাইস চেয়ারম্যান পদে আজিজুল হক আওয়ামী লীগ সমর্থিত, সাইফুর রশীদ ঝণ্টু বিএনপি সমর্থিত, আব্দুর রউফ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। অপর প্রার্থী বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মনা ইতোমধ্যেই বিএনপি প্রার্থী সাইফুর রশীদ ঝণ্টুর চশমা প্রতীকে সমর্থন জানিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেত্রী কহিনুর বেগম ফুটবল প্রতীক, বিএনপি নেতৃ জাহানারা বেগম হাঁস প্রতীক, মমতাজ বেগম কলস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে রয়েছে ৪ জন। বিএনপি সমর্থিত শহিদুল কাওনাইন টিলু দোয়াত-কলম, বিএনপি একাংশের বতর্মানে বহিষ্কৃত সানোয়ার হোসেন লাড্ডু মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন হেলাল উদ্দীন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে জোর প্রচারণায় রয়েছেন। জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী নূর মোহাম্মদ টিপুর প্রতীক কাপ-পিরিচ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৭ জন। এরা হলেন- আহম্মেদ জালাল, কাজী খালেদুর রহমান, এমদাদুল হক, গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর আলম, মাহাবুবু হোসাইন, মিজানুর রহমান মধূ। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন। এরা হলেন- পাপিয়া ইসলাম, পারুলা খাতুন রাবেয়া, শামীম আরা খাতুন, হাফিজা খাতুন, সামসাদ রানু।

গত ২৩ মার্চ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শুরু পর থেকেই কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করা হয় বলে অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াত। একটি কেন্দ্র স্থগিত করা হলেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। এ নির্বাচনের পর থেকেই চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গার বিএনপি জামায়াত প্রার্থীদের মধ্যে ভোট ডাকাতির শঙ্কা কুরে কুরে খাচ্ছে। তবে প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়েছে, নির্বাচন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অবাধ পরিবেশেই সম্পন্ন করা হবে। শেষ পর্যন্ত ভোটগ্রহণ কি সত্যি সুষ্ঠু পরিবেশে হবে? জবাব পেতে এখন অপেক্ষার পালা।