চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদাসহ দেশের ৮১ উপজেলায় আজ ভোট

 

স্টাফ রিপোর্টার: আজ শনিবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদাসহ দেশের ৮১ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গোপন ব্যালটে ভোটাররা তাদের পছন্দের জনপ্রতিনিধির প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সকল প্রকারের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে।

দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ ভোটগ্রহণ কার্যক্রম। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে সকল প্রস্তুতি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রেই পৌঁছে গেছে স্বচ্ছ ব্যালটবাক্সসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। ভোটারদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে আসার স্বার্থে পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে আলাদা আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্বাচনী এলাকায় সার্বক্ষণিকভাবে রাখা হয়েছে বিজিবি, সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের ৮টি ইউনিটের পাশাপাশি পুলিশের ১৮টি মোবাইলটিম ও ৫টি স্ট্রাইকিং টিম। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নে ১২টি, জুড়ানপুর ইউনিয়নে ১০টি, নতিপোতা ইউনিয়নে ৯টি, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নে ১২টি, কুড়–লগাছি ইউনিয়নে ৯টি এবং দর্শনা পৌরসভায় ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও অন্তত ৪৮ উপজেলায় থাকছে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। অন্যদিকে দামুড়হুদা উপজেলায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ৪০টি উপজেলায় রয়েছে বিদ্রোহীপ্রার্থী। জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত প্রার্থী রয়েছেন শক্ত অবস্থানে। তৃতীয় ধাপের ৮১ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দামুড়হুদাসহ মাত্র ৩৩টিতে একক প্রার্থী দিতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। আর বিএনপি একক প্রার্থী দিতে পেরেছে ৩৪টিতে। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রয়েছেন- আ.লীগ সমর্থিত জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ (কাপপিরিচ), বিএনপি সমর্থিত দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী শাহ (ঘোড়া), বিএনপি নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান (দোয়াত-কলম), বিএনপি নেতা এজাজুল হক (আনারস) প্রতীকে। তবে প্রতীক বরাদ্দের পর এজাজুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে তার পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই জানানো হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর সমর্থিত জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাউলী ইউপি চেয়ারম্যান মাও. আজিজুর রহমান (মোটরসাইকেল)। এছাড়া আ.লীগ ও বিএনপি সমর্থিত ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন ৬ প্রার্থী। এরা হলেন- আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম (চশমা), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আকবর লাইলী (প্রজাপতি), জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত দর্শনা পৌর জামায়াতের আমির আব্দুল কাদের (টিউবওয়েল), বিএনপি সমর্থিত হাবিবুর রহমান বুলেট (টিয়াপাখি), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছালমা জাহান পারুল (হাঁস), বিএনপির একাংশ সমর্থিত আবুল হাসেম (তালা) প্রতীক। দামুড়হুদার কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট কারচুপির আশঙ্কার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানানো হলেও জামায়াতে ইসলামী অবশ্য স্বস্তি প্রকাশ করতে পারেনি।

জানা গেছে, প্রথম ধাপের ৯৭টি উপজেলার নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ৪৪টি উপজেলায় জয়ী হন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী জিতেছেন ৩৪টি উপজেলায়। দ্বিতীয় ধাপে ১১৫টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বিএনপি সমর্থিতরা ৫২টিতে ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ৪৬টিতে জয় পান। নিজ দলের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে শেষ মুহূর্তে তত্পর প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান- এ তিনটি পদে জয়ী হতে আজ লড়ছেন মোট এক হাজার ১১৯ প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪১৯ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪২৩ জন এবং সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আজকের নির্বাচনে কোনো উপজেলায় কোনো ধরনের সহিংসতা হলে তাত্ক্ষণিকভাবে সেখানে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেয়া হবে।

তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় নির্বাচন: এবার দামুড়হুদাসহ অন্য যে ৮০টি উপজেলায় নির্বাচন হবে সেগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর, দিনাজপুর সদর ও নবাবগঞ্জ, নীলফামারী সদর, লালমনিরহাটের আদিতমারী, কুড়িগ্রাম সদর, রৌমারী ও চিলমারী, গাইবান্ধা সদর ও সাদুল্লাপুর, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, ভোলাহাট ও শিবগঞ্জ, নওগাঁর মান্দা, পোরশা ও ধামুইরহাট, রাজশাহীর গোদাগাড়ি, চারঘাট ও দুর্গাপুর, যশোরের মনিরামপুর, নড়াইলের লোহাগড়া, বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, মোংলা ও শরণখোলা, খুলনার পাইকগাছা, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, ভোলা সদর, বরিশালের মুলাদী, হিজলা ও বাবুগঞ্জ, পিরোজপুরের নেছারাবাদ, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, শেরপুরের শ্রীবর্দী, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, গৌরীপুর, মুক্তাগাছা, ফুলপুর ও ধোবাউড়া, নেত্রকোনা সদর ও মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ সদর, কুলিয়ারচর ও হোসেনপুর, ফরিদপুর সদর, আলফাডাঙ্গা ও সদরপুর, চরভদ্রাসন, ভাঙ্গা ও মধুখালী, গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া, শরীয়তপুর সদর ও নড়িয়া, সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী ও দেলদুয়ার, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, হোমনা, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম, ব্রাহ্মণপাড়া, তিতাস, চাঁদপুরের কচুয়া ও হাজিগঞ্জ, নোয়াখালীর সেনবাগ, লক্ষ্মীপুরের কমলনগর, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ ও সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটির বরকল, বাঘাইছড়ি ও কাউখালী, মানিকগঞ্জের ঘিওর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, ফেনীর দাগনভূঁইয়া এবং বান্দরবান জেলার বান্দরবান সদর ও আলী কদম।