জীবননগরে দখল হচ্ছে ভৈরব নদ : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

 

জীবননগর ব্যুরো: বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে আবারো দখল হচ্ছে জীবননগর উপজেলায় ভৈরব নদ। প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া এলাকায় ভৈরব নদের মাঝখানে বাঁধ দিয়ে এবং পুকুর খনন করে অবৈধ দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আবার কেউ কেউ এ নদের দু পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে তাতে চাষাবাদ শুরু করেছে। যদি জরুরি ভিত্তিতে এসব বাঁধ অপসারণ ও অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জমি দখলমুক্ত করা না হয় তাহলে অচিরেই এ নদের অস্তিত একেবারে বিলীন হয়ে যাবে।

জীবননগর উপজেলা ভূমি অফিসসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উথলী, আন্দুলবাড়িয়া ও বাঁকা ইউনিয়নে ১ নম্বর সরকারি খাস খতিয়ানে ভৈরব নদের প্রায় ৮৩ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে জীবননগর পৌরসভায় ২১ হেক্টর, উথলী ইউনিয়নে ৩২ হেক্টর, আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৯ হেক্টর ও বাঁকা ইউনিয়নে ১১ হেক্টর জমি রয়েছে।

সরেজমিনে আন্দুলবাড়িয়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আন্দুলবাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে নদের মাঝখানে বড় একটি পুকুর খনন করে তাতে মাছচাষ করা হচ্ছে। নদের জমি দখল করে পুকুরটি খনন করেছেন ওই এলাকার অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য মো. দলু। নদের মাঝখানে পুকুর খননের ফলে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। একইভাবে কর্চ্চাডাঙ্গা শ্মশানঘাটের পাশে নিজের ইটভাটার ইট ও অন্যান্য মালামাল ট্রাকযোগে সহজে নিয়ে যাওয়া-আসার সুবিধার জন্য নদের মাঝ বরাবর বাঁধ দিয়েছেন ভাটামালিক মো. আজিম। এ বাঁধের কারণেও নদের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। শুধু মো. দলু ও মো. আজিম নয়। ওই এলাকার প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা একাধিক যায়গায় বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে নদের জমি দখল করেছেন।

এলাকার কৃষক জানান, আগে ভৈরব নদের পানি দিয়ে ধানসহ অন্যান্য ফসল ক্ষেতে সেচ দিতাম। কিন্তু ভূমি দস্যুরা নদের মাঝ বরাবর বাধ দেয়ার কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে নদ একেবার শুকিয়ে গেছে। ফলে ডিজেল চালিত শ্যালোইঞ্জিন দিয়ে ফসল ক্ষেতে সেচ দেয়ার কারণে উৎপাদন খরচ বহুগুনে বেড়ে গেছে। তিনি জানান, ভূমি দস্যুরা এর আগে একবার এভাবে নদের জমি দখল করে নিয়েছিলো। তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে তা দখলমুক্ত হয়েছিলো। কিন্তু বর্তমানে প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ বা নজরদারি না থাকায় ভূমি দস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

জানতে চাইলে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাজেদুর রহমান বলেন, যে সমস্ত ব্যক্তিরা নদের মাঝবরাবর বাঁধ দিয়েছে এবং নদের দু পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে চাষাবাদ করছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।