স্টাফ রিপোর্টার: রাস্তার পাশে মাচায় বসে গল্প করছিলেন মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর গ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কয়েক যুবক। এ সময় মুজিবনগর থানার এসআই আনিছুর রহমানসহ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যরা তাদের ওপর অতর্কিত লাঠিপেটা করে। কোনো ঘটনা কিংবা অপরাধ ছাড়াই পুলিশের এমন আচরণে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন গ্রামবাসী। পরিস্থিতি বেসামাল হলে মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম খান ক্ষমা প্রার্থনা করে গ্রামের মানুষকে সাময়িক নিবৃত্ত করেছেন। তবে ক্ষোভের আগুন এখনো জ্বলছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে।
বল্লভপুর গ্রামের সুকুমার মণ্ডলের ছেলে রাজন মণ্ডল ও দুর্জয় পালের ছেলে মিঠু বিশ্বাস জানিয়েছেন, তারা ছয় বন্ধু বিকাশ মণ্ডলের বাড়ির সামনে মাচায় বসে গল্প করছিলেন। এ সময় মুজিবনগর থানার এসআই আনিছসহ সঙ্গীয় কয়েকজন পুলিশ সদস্য এসে তাদের নাম পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। উত্তর দেয়ার আগেই পুলিশ সদস্যরা লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। আশেপাশের লোকজন জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ জানায়। অবস্থা বেগতিক দেখে সটকে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হলে বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দোষী পুলিশ সদস্যদের বিচার দাবি করেন তারা। লাঠিপেটায় আহত ছয় যুবককে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়। গ্রামবাসীর দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন। তিনি বলেন, পুলিশ কেন মানুষ মারবে। এর বিহিত না হলে গ্রামের মানুষের সাথে নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে যাবো।
এদিকে গ্রামের মানুষের ক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন মুজিবনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম খান। কিন্তু কোনো সদুত্তোর দিতে ব্যর্থ হন তিনি। ক্ষোভ প্রশমনের কোনো ব্যবস্থাও করতে পারছিলেন না। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন ওসি আসলাম খান। তবে তারপরেও সন্তুষ্ট নন ভুক্তভোগীসহ গ্রামবাসী। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপরে হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের কি বিচার করবেন সে বিষয়ে ওসির কাছে প্রশ্ন তোলেন তারা। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সুযোগ পান ওসি আসলাম খান।