জীবননগর সীমান্তের ৬২ বিঘা জমি ৩৮ বছর ধরে ভারতের দখলে

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার বেনিপুর বিওপির বিপরীতে ইছামতি নদীর পাশে ৬১ নং মেন সীমানা পিলারের পার্শ্ববর্তী ২০ একর ৬১ শতক (৬২ বিঘা) বাংলাদেশি জমি দীর্ঘদিন থেকে ভারতীয়রা দখল করে রেখেছে। বিজিবি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার বলা সত্ত্বেও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ এ জমির দখল ছাড়েনি। দখল হওয়া এ জমির মধ্যে সরকারি খাস খতিয়ানে রয়েছে ১৫ দশমিক ৭৫ একর এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি রয়েছে ৪ দশমিক ৮৬ একর।

এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনিপুর সীমান্তের ইছামতি নদীর পাশে ৬২ বিঘা জমি ১৯৭৬ সালের জুন মাসে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কোনো কারণ ছাড়াই হঠাত করে জমি ভোগদখলকারী বাংলাদেশিদেরকে চাষাবাদ করতে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে বাংলাদেশের হাত ছাড়া হয়ে যায় ৬২ বিঘা জমি। ওই সময় এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএসএফ ও তৎকালীন বিডিআরের মধ্যে উত্তেজনাও দেখা দেয়। তৎকালীন সময়ে বিডিআর ও বিএসএফ’র মধ্যে কয়েকবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও বিএসএফ এ জমির দখলদারিত্ব ছাড়েনি। বিএসএফ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এ জমি তাদের দখলে রেখেছে। দীর্ঘদিন ধরে এ জমিতে কখনও ভারতীয়রা আবার কখনও বাংলাদেশিরা গরু চরিয়েছে। বর্তমানে এ জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এবং কিছু জমি ফুটবল খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ দখলীয় জমির বিরোধ নিষ্পত্তিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০১০ সালের ১৯ মে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) নের্তৃত্বে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সীমান্তের অপদখলীয় জমি পরিদর্শন করেন এবং ২০১০ সালের ২৬ মে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবরে একটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ অপদখলীয় জমি নিষ্পত্তিসহ এজেন্ডাভুক্ত আরো ৫টি বিষয়ে সীমান্ত এলাকায় বৈঠক করার জন্য ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ভারতের নদীয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে আজ অবধি ওই চিঠির কোনো জবাব দেয়া হযনি এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফরা অপদখলীয় এ জমির দখলদারিত্ব ছাড়েনি।

এ ব্যাপারে বর্ডার গার্ড চুয়াডাঙ্গা-৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল এসএস মনিরুজ্জামান বলেন, এ অপদখলীয় জমি ফেরত পেতে বিজিবির পক্ষ থেকে নিয়মানুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।