দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : ফিরে দেখা

 

দামুড়হুদা অফিস: দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালের ২৫ মে। দ্বিতীয় উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনী তথ্য জেলা নির্বাচন অফিসে সংরক্ষণ নেই। তার কারণ হিসেবে জেলা নির্বাচন অফিস জানায়, উপজেলা নির্বাচন দেশ থেকে মাঝপথে বিলীন হওয়ায় এ দশার সৃষ্টি হয়।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত দামুড়হুদা উপজেলার প্রথম নির্বাচনে এ উপজেলার ভোটার ছিলো প্রায় ৮৫ হাজার। এ চেয়ারম্যান নির্বাচনে তখন ৭ জন বাঘা বাঘা প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ফজলুর রহমান জাতীয় পার্টির সমর্থিত প্রার্থী হাবিবুর রহমান হবিকে প্রায় ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে এ উপজেলার প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানের প্রাপ্তি ভোটের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১৮ হাজার। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হাবিবুর রহমান হবির প্রাপ্ত ভোট ছিলো প্রায় ৮ হাজার। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী বাকি প্রতিদ্বন্দ্বীগণ হলেন- ডা. ফকির মোহাম্মদ, ডা. নজীর আহম্মেদ, আব্দুল ওদুদ শাহ, শামসুল ইসলাম ও আবু কায়জার আলী মাষ্টার।

এ উপজেলার দ্বিতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। এ সময় মোট ৪ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। চেয়ারম্যান ফজলুর রহমানকে ১০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লিয়াকত আলী শাহ। দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী শাহের প্রাপ্ত ভোট ছিলো প্রায় ৩৩ হাজার আর পরাজিত ফজলুর রহমানের প্রাপ্ত ভোট ছিলো প্রায় ২৩ হাজার। অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ নাজিম উদ্দিনের প্রাপ্ত ১৪ হাজার ও জিল্লুর রহমানের প্রাপ্ত ভোট ছিলো প্রায় ২ হাজার। সে সময় ভোটারের সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ১১ হাজার।

তৃতীয় দফা উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজাদুল ইসলাম আজাদ বিএনপি প্রার্থী লিয়াকত আলী শাহকে ৩১ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে তৃতীয় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান আজাদুল ইসলাম আজাদের (ছাতা) প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৮৩ হাজার ৩৩৭ আর পরাজিত লিয়াকত আলী শাহ’র (চেয়ার) প্রতীকে প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৫২ হাজার ৭৩টি। এছাড়াও আব্দুল লতিফ, ফজলুর রহমান, শাহারিয়া কবীর ও আলমগীর হোসেন চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এ সময় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৮ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৩৯ হাজার ১১৮ জন ভোটার, এর মধ্যে বাতিল বলে গণ্য হয় ২ হাজার ৯৪৩টি।

ভাইস চেয়ারম্যান পদে (উড়োজাহাজ) প্রতীক নিয়ে ৭০ হাজার ৬১৩ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের রফিকুল আলম ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি আবুল হাসেম বাঘ প্রতীক নিয়ে ভোট পান ৫২ হাজার ৪৬৯টি। এদের জয়-পরাজয়ে ভোটের ব্যবধান ছিলো ১৮ হাজার ১৪৪ ভোট। এ পদে নুর আলম তালা প্রতীকে ভোট পান ৭ হাজার ১১৯টি এছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন আশরাফ আলী, আমিনুল ইসলাম ও আবুতালেব।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির ছালমা জাহান পারুলকে ১৪ হাজার ১৫৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের রওশন আকবর লাইলী। প্রজাপতি প্রতীক নিয়ে রওশন আকবর লাইলীর প্রাপ্ত ভোট ছিলো ৭০ হাজার ৪৪৪টি আর ছালমা জাহান পারুল হাঁস প্রতীক নিয়ে ভোট পান ৫৬ হাজার ২৯০টি। এছাড়াও রাশিদা আমান নিষ্ক্রিয়ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।

আগামী ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দামুড়হুদার চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন। নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। আর মাত্র কয়দিন পর এ উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সব মিলিয়ে এ উপজেলাবাসীর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন এ নির্বাচন। গত সংসদ নির্বাচন নিরুত্তাপ থাকায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে এলাকার মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা ও গ্রামগঞ্জে উৎসবমুখর পরিবেশ লক্ষণীয়। প্রার্থী নির্বাচনেও ভোটাররা অনেক হিসাব-নিকাশ কষছেন। শেষ হাসি কে কে হাসবেন তা দেখার জন্য এলাকাবাসী রয়েছে অধীর আগ্রহে।