ভোটের ৫ দিন পরও শৈলকুপার মথুরাপুর ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী ৩৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সম্মানি পাননি

 

ঝিনাইদহ অফিস: ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছিলেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মথুরাপুর কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা ৩৪ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সন্ত্রাসীদের গলাধাক্কাও খেয়েছেন কেউ কেউ। তারা হামলা করে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়ায় ওই কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়ে গিয়েছিলো। তবে শৈলকুপার উপজেলার অন্য সব কেন্দ্রের ফলাফলের পর চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতেই। অথচ হামলার ঘটনার কারণে নির্বাচনের ৫ দিন পরও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের সম্মানি পাননি। প্রতিদিন তাদের নানা অজুহাতে ঘোরানো হচ্ছে। কখনও বলা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হতে পারে তাই এখনই টাকা দেয়া সম্ভব নয়। আবার কখনও বলা হচ্ছে থানায় একটি মামলা হয়েছে। সেটির সমাধান না হওয়ায় টাকা দেয়া যাচ্ছে না।

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণের কাজে দায়িত্ব পালনকারী একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি সকালে তারা ভোটগ্রহণ শুরু করে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কয়েকশ লোক একত্রিত হয়ে হঠাত তাদের কেন্দ্রে হামলা চালায়। তারা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার চেষ্টা করে। এতে তাদের কয়েকজন বাধা দিতে গিয়ে গলাধাক্কা খান। পরে কর্মরত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীর তৎপরতায় তারা ভোট দিতে পারেনি, তবে ব্যালট পেপারগুলো নিয়ে যায়। এরপর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তারা ভোটগ্রহণ স্থগিত করেন।

কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আরো জানান, ভোটে দায়িত্ব পালন করায় তাদের জন্য বরাদ্দ সম্মানি আগে থেকেই প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে দেয়া ছিলো। তারা ভোটগ্রহণের সময় শেষে সবকিছু বুঝে দিয়ে টাকার জন্য অপেক্ষা করেন। তাদেরকে টাকা দেয়া হবে বলে রাত ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে পরে আর দেননি। বলে দেয়া হয়েছে কেন্দ্রে ঝামেলা হওয়ায় এখনই টাকা দেয়া যাচ্ছে না। তারা অদ্যবধি তাদের পারিশ্রমিক পাননি। কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলে পরে কথা বলতে বলেন। তবে কবে কখন যোগাযোগ করবেন সেটা নিশ্চিত করে কেউ বলছেন না। ফলে তারা আদৌও টাকা পাবেন কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার এজেডএম আল মামুন জানান, তার কেন্দ্রে ৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, ১২ জন পোলিং অফিসার, ৩ পুলিশ ও ১২ জন আনসার দায়িত্ব পালন করেছেন। যাদের টাকা দেয়া হয়নি ঠিক, তবে তারা দ্রুত টাকা পাবেন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রে ঝামেলা হওয়ায় টাকা দেয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে টাকা জমা আছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সবুজ সঙ্কেত পেলেই তারা সবাইকে টাকা দিয়ে দেবেন।

শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রিন্স জানান, এ টাকা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। ২/৪ দিনের মধ্যে তারা যাতে টাকা পেতে পারেন সে ব্যাপারে তিনি চেষ্টা করে যাচ্ছেন।