আলমডাঙ্গার নাগদহে কৃষক শহিদ হত্যামামলা আপসের জন্য আবারও চাপ প্রয়োগের অভিযোগ

আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় বিরূপ সমালোচনা মুখে পুলিশ

মোমিনপুর প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার নাগদহে কৃষক শহিদ হত্যামামলার প্রভাবশালী আসামি পক্ষের লোকজন আবারও অসহায় বাদী পক্ষকে আপসের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। ইতঃপূর্বে আপস করার জন্য একাধিকবার ব্যর্থ হয়ে আবারও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আপস করার জন্য চাপ দেয়। আপস নয়, হত্যাকারীদের শাস্তি চাই। চাই ফাঁসি। মামলার বাদী পক্ষ এ দাবিতে অটল থাকলেও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। স্থানীয়রা পুলিশের বিরুদ্ধে বিরূপ সমালোচনাও শুরু করেছে।

সালিসসভা থেকে ছুটে গিয়ে বাড়ির উঠোনে স্ত্রী সন্তানদের সামনে পিটিয়ে ও দলেচটকে হত্যার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আসামিদের টিকি ছুঁতে পারেনি। আসামিরা গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপন করেছে। কেউ কেউ উচ্চাদালতে অন্তবর্তীকালীন জামিনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বলেও পুলিশসূত্র জানিয়েছে।

অবশ্য স্থানীয়রা বলেছে, মাঝে মধ্যে গ্রামে লোক দেখানো অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আসামিদের অনেকেই ঘুরছে প্রকাশ্যে। স্থানীয়দের অভিযোগ, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। গতকাল বুধবার দুপুরে দরিদ্র কৃষক নিহত শহিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শুধু আপনজনের মধ্যেই নয় বাড়ির প্রতিটি কোণে এখনও শোক বিরাজ করছে। ঘটনার ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও তারা স্বাভাবিক হতে পারছে না। শহিদের স্ত্রী যেমন স্বামীকে হারিয়ে বিধবা হয়েছেন। তেমনই প্রতিবন্ধীসহ তিন সন্তান পিতা ছাড়া এতিম হওয়ায় আর্তনাদ অব্যাহত রয়েছে। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি দরিদ্র কৃষক শহিদ খুন হওয়ার পর থেকে তার পরিবারের সবাই অতি কষ্টে জীবন যাপন করছে। নিহত শহিদের স্ত্রী রোসিলা খাতুন ও তার তিন সন্তান সাংবাদিকদের দেখে অঝরে কাঁদতে থাকেন। স্ত্রী রোসিলা খাতুন আর্তনাদ করে বলেন ওরা টাকা দিয়ে আবারও আপস করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। আমরা গরিব হতে পারি কোনো প্রলোভন দেখিয়ে লাভ হবে না। আমরা খুনিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে সবসময় সোচ্চার থাকব। শহিদের বড় মেয়ে প্রতিবন্ধী রোকেয়া খাতুন বলে এদেশে আইন কি শুধু সমাজের প্রভাবশালীদের? গরিব হলে কি সুষ্ঠু বিচার পাওয়া যায় না। কথাগুলো বলার পর মাথা নিচু করে প্রতিবন্ধী রোকেয়া হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে। শহিদের ভাতিজা সাইদুর রহমান জানায় আইনি সহায়তা পাওয়ার জন্য জেলা লোকমোর্চার নিকট লিখিত আবেদন করেও এখনও পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পেলাম না। আসামি পক্ষের লোকজন গ্রামে প্রতিদিন খুব ফুরফুরে মেজাজে ঘোরাফেরা করছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি আসামিদের অনুকূলে থাকায় আসামি পক্ষের লোকজন দৌড়ঝাপ অব্যাহত রেখেছে। এলাকায় জোরালে জনশ্রুতি রয়েছে জমির ক্রেতা ছোট ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের ভাড়া করে। নেশার টাকার জন্য মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নৃশংসভাবে শহিদকে হত্যা করে।

পরের পৃষ্ঠায় একটি ছবি সংযুক্ত আছে। নিহত শহিদের স্ত্রী সহ তিন সন্তান।