মেয়েসহ জোড়া খুনের দায়ে ভারতীয় দম্পতির যাবজ্জীবন

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মেয়ে আরুশিসহ জোড়া খুনের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পেলেন দন্ত চিকিত্সক দম্পতি রাজেশ ও নূপুর তালওয়ার। দিল্লির অদূরে গাজিয়াবাদে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (সিবিআই) বিশেষ আদালতের বিচারক শ্যামলাল গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দু পক্ষের যুক্তি শোনার পর তার রায় জানান। সাজা ঘোষণার আগেই রাজেশ ও নূপুর তালওয়ারের আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা এলাহাবাদ হাইকোর্টে আপিল করবেন। আপিলের জন্য তাদের এক মাস সময় দেয়া হয়েছে। আরুশি হত্যাকাণ্ড ভারতের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত অপরাধের ঘটনাগুলোর একটি। সাড়ে পাঁচ বছর আগে দিল্লির লাগোয়া উত্তর প্রদেশের নয়ডায় রাজেশ ও নূপুর তালওয়ারের বাড়িতে তাদের একমাত্র সন্তান আরুশির গলাকাটা মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৪ বছরের আরুশির মাথায়ও ভারী ও ভোঁতা বস্তুর আঘাতের চিহ্ন ছিলো। বাড়ির পরিচারক হেমরাজের (৪৫) খোঁজ না মেলায় প্রথম দিকে তাকেই হত্যাকারী বলে সন্দেহ করা হয়। কিন্তু পরে বাড়ির ছাদে হেমরাজের গলাকাটা লাশ খুঁজে পাওয়ার পর তদন্ত অন্য দিকে মোড় নেয়। এ হত্যাকাণ্ডের কোনো প্রত্যক্ষদর্শী ছিলো না। কেউ বাইরে থেকে এসে খুন করে পালিয়ে গেছে, এ রকম প্রমাণও পাওয়া যায়নি। প্রথম দিকে তালওয়ার দম্পতি ছাড়া পেয়ে গেলেও সিবিআই নতুন করে তদন্ত শুরু করলে পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ওপর নির্ভর করে আদালত এ দম্পতিকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন। ৪৫ বছর বয়সী পরিচারকের সাথে আরুশির সম্পর্কের কথা জানতে পেরে পারিবারিক সম্মান রক্ষা করতে তালওয়ার দম্পতি এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে সিবিআইয়ের দাবি। গতকাল দুপুরে বিচারপতি শ্যামলালের এজলাসে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে চরমতম সাজা ফাঁসির দাবি জানানো হয়। বলা হয়, অপরাধীরা শুধু একজনকে নয়, ঠান্ডা মাথায় দুজনকে হত্যা করেছেন। ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাত করার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলার নালি কাটা হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ লোপ করারও চেষ্টা তারা করেছেন। তালওয়ার দম্পতির আইনজীবী পাল্টা আবেদনে বলেন, কেবল পারিপার্শ্বিক প্রমাণের নিরিখে অপরাধী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তা ছাড়া তালওয়ারদের অপরাধের অন্য কোনো রেকর্ডও নেই। তাই তাদের যেন কম সাজা দেয়া হয়।

Leave a comment