বন্ধ হোক জালটাকা কারবারীচক্রের অপতৎপরতা

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার পশুহাটে জালটাকা দিয়ে গরু কেনার সময় হাতেনাতে দু প্রতারক ধরা পড়েছে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার সাতগাড়ি মোড়ের দুটি দোকানে জালটাকা দিয়ে সিগারেট কিনে ধরা পড়লেও স্থানীয় কয়েক ব্যক্তির সহযোগিতায় প্রতারক পালিয়েছে। এর মাঝে যে চিত্রটি ফুটে উঠেছে তা হলো জালটাকা কারবারীচক্র তথা প্রতারকেরা আশেপাশেই ঘুর ঘুর করছে। সুযোগ বুঝে জালটাকা গছিয়ে দিয়ে শুধু ঠকাবেই না, বিপদেও ফেলতে পারে। চোখের পলকে ঘটতে পারে বিপত্তি। ফলে সাবধান!

 

নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে, প্রযুক্তির বদৌলতে টাকার নোট এমনভাবে জাল করা হচ্ছে শাদা চোখে দেখে আসল নকল চেনা ভার। ভাগ্যিস পশুহাট থেকে শুরু করে হাট-বাজারে জালনোট শনাক্তের যন্ত্রও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যন্ত্র থাকলেই হবে না, টাকা লেনদেনের সময় যন্ত্র দিয়ে যাচাই তথা বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। জালটাকা কারবারীচক্র চতুরতার সাথে জালটাকা গছিয়ে দিয়ে মালামাল নিয়ে সটকে পড়ে। জালটাকা প্রস্তুত করে প্রতারকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উঠতি বয়সী যুবকদের লোভের ফাঁদে ফেলে কারবারে যুক্ত করে। বুঝে ওঠার আগে এদেরই কেউ কেউ ধরা পড়ে। যারা ধরা পড়ে তাদের মাধ্যমেই রাঘবোয়ালদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নেয়া সম্ভব। অবশ্য এ জন্য প্রয়োজন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের দায়িত্বশীল কর্তার আন্তরিক প্রচেষ্টা। মাঠপর্যায়ে টাকা ছড়ানোর চেয়ে রাঘববোয়ালরা অধিক ভয়ঙ্কর।

 

প্রতারকরা যে কতো রকমভাবে প্রতারণার ফাঁদ পাতছে তা অনুমান করাও যেন অসম্ভব হয়ে পড়ছে। পদে পদে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা। বাস-ট্রেন, লঞ্চ-স্টিমারে অজ্ঞান পার্টির উৎপাত। বিদেশে মোটা অঙ্কের বেতনে ভালো চাকরি দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কাড়ি কাড়ি টাকা। অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়ে বিপথগামী হয়ে পড়ছে। সহজ শর্তে স্বল্পসুদে ঋণ দেয়ার নাম করে লগ্নি নিয়ে রাতারাতি লাপাত্তা হচ্ছে হরেক নামের সংস্থা। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী অর্থ হারিয়ে হায় হায় করছে। চক্রবৃদ্ধিহারে লাভ দেয়ার কথা বলেও লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি উধাও হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। অঙ্কের ধন্ধে ফেলে বহুমুখি বিক্রয় ব্যবস্থার নামে প্রতারণা অব্যাহত থাকলেও বেকার জনগোষ্ঠীর যেন ঘোর কাটছেই না। এছাড়াও খাদ্যদ্রব্যে, কৃষি উপকরণসহ জীবনরক্ষাকারী ওষুধও নকল করে প্রতারকচক্র জনসাধারণের সাথে প্রতারণা করছে। এতোসব প্রতারণার মাঝে জালটাকা অধিক ঝুঁকির, অধিক ভয়ের।

 

জালটাকার নোট যার কাছে পাওয়া যায় মূলত তাকেই আইনের আওতায় নেয়ার বিধান রয়েছে। মাঝে মাঝে ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়েও বাণ্ডিলের মধ্যে দু একটি নোট জাল বের হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে। মাঝে মাঝে জালটাকার অনেক নোটসহ হাতেনাতে ধরা পড়ে, শুধুমাত্র তাদেরকেই বিচারের সম্মুখিন করা হয়। অধিকাংশ রাঘববোয়ালই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। জালটাকা কারবারীচক্রসহ সকল প্রতারকেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কাম্য।