একজনকে নেয়া হয় হাসপাতালে
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এক বান্ধবীর দেয়া পাউরুটি ও জেলি খেয়ে সহপাঠি ৫ ছাত্রী অসুস্থ হয়েছে বলে জানা গেছে। অপেক্ষাকৃত বেশি অসুস্থ অর্পা নামের একছাত্রীকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, গতকাল রোববার চুযাডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রভাতী শিফটের জুই শাখার জাবিবা বিন জহিরের দেয়া পাউরুটি ও জেলী খেয়ে সহপাঠি ৫ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ ছাত্রীরা ঘন ঘন বমি, চোখ-মুখ লালচে হওয়াসহ তাদের শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। এ অবস্থা দেখে শিক্ষকরা অভিভাবকদেরকে খবর দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাসায় পাঠান। প্রাপ্ততথ্য অনুযায়ী অসুস্থরা হলো- ফাহমিদা মাসুদ স্বর্ণ, পূর্ণতা, মাহা, স্বর্ণালী ও অর্পা। তবে অসুস্থদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী জানায়, অসুস্থের সংখ্যা সাতের অধিক। এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি অসুস্থ অর্পাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। অসুস্থদের একজন বলে, জাবিবা বিন জহির বাসা থেকে পাউরুটি ও জেলী নিয়ে এসে তার সহপাঠিদের খেতে দিলেও সে নিজে তা খায়নি। আবার খাওয়ানোর পরপরই জাবিবা স্কুল ত্যাগ করে।
আবার শোনা গেছে, জাবিবা গেটের বাইরে দাঁড়ানো ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে পাউরুটি ক্রয় করে এনে সহপাঠীসহ নিজেও তা খায়। পরস্পর বিরোধী এ কথার সহজ উত্তর দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল হোসেন উজ্জ্বল। তিনি বলেন, এটি একটি বিছিন্ন ঘটনা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চাকরিরত জহির মল্লিকের মেয়ে প্রভাতী শিফটের তৃতীয় শ্রেণি জুই শাখার জাবিবা বিন জহির তার বাসা থেকে পাউরুটি ও জেলী টিফিন হিসেবে নিয়ে এসেছিলো। ক্লাসের ফাঁকে সে তা নিজে খায় ও বান্ধবীদের খেতে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর দু-একজন সামান্য বমি করেছে। পরে তাদের অভিভাবকদের খবর দিয়ে বাসায় পাঠানো হয়। খুব সম্ভবত মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার কারণে এমনটি হতে পারে। যা ফুড পয়জন হিসেবে কাজ করেছে।
এদিকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে গতকাল রোববার মাথাভাঙ্গা দপ্তরে একাধিক অভিভাবক ফোন দিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানতে চান। অনেকে বলেন, ঘটনা সামান্য হলেও তা কিন্তু উদ্বেগের বিষয়। বিদ্যালয়ের গেটের সামনে যে সব ভ্রাম্যমাণ দোকান মুখোরচক খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ছাত্রীদের নিকট বিক্রির জন্য তা মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। রাস্তার ধুলা-বালী, ময়লা-মাটি ও বাসিপচা তেলে মেশানো খাবার। যা খেয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হবে এটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন বলেন, বাইরের খোলা বাসি খাবার মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। শিশুদের এ খাবার কোনো মতেই খেতে দেয়া উচিত নয়। কারণ বোতলে ইনট্যাক অবস্থায় ওষুধ থাকলেও তার মেয়াদোত্তীর্ণের ডেট থাকে। কিন্ত ভ্রাম্যমাণ দোকানের এসব খাবারে তার কোনো ব্যবস্থা নেই। দীঘদিনের বাসিপচা খাবারের সাথে নুতুন করে আবার খাবার মিশিয়ে তা আবার বিক্রি করা হচ্ছে।
এছাড়া ভ্রাম্যমাণ এসব খাবারের দোকান গেটে দাঁড়িয়ে থেকে যানজটের সৃষ্টি করে। যা শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারা-পারে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তাই অতিসত্বর এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বিদ্যালয়ের গেট থেকে সরিয়ে দেয়ার দাবি করেন অভিভাবকরা। বাইরের খাবার না খাওয়ার জন্য প্রতিমাসে টিফিন বাবদ শিক্ষার্থীরা ৮০ টাকা করে দিয়ে থাকে। তারপরও বাইরের খাবার না খাওয়ার অভ্যাস গড়ার জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরই দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।