চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগ বাতিলের দাবি করে আদালতে মামলা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অবৈধভাবে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই সাথে কর্মরত থাকায় পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের পদ বাতিলের দাবি করে এ মামলা করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের বড়বাজার পাড়ার মৃত এসএম আব্দুল্লাহর ছেলে সামসুল আলম সেলিম গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গার সদর সহকারী জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ আব্দুল হালিম মামলাটি গ্রহণ করে মামলার সাত বিবাদীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। একই সাথে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৪ নভেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালত।
বিবাদীরা হলেন- অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, চুয়াডাঙ্গা হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, পৌর ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী আহাম্মেদ, পৌর কলেজের নিয়োগকালীন অধ্যক্ষ শামসুল হক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, হোমিওপ্যাথিক বোর্ড ও মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
বাদী সামসুল আলম সেলিম তার আরজিতে বলেছেন, শাহজাহান আলী ২০০২ সালের ২২ মার্চ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রভাষক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ২০১১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি পৌর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। পৌর ডিগ্রি কলেজে একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডিগ্রিধারী অধ্যক্ষ নিয়োগ না করে অজ্ঞাত কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি লঙ্ঘন করে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শাহজাহান আলীকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। এতে পৌর ডিগ্রি কলেজের ক্ষতিসাধন হয়েছে। হোমিওপ্যাথিক কলেজ সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলে বলে তিনি আরজিতে উল্লেখ করেছেন।
মামলাটির উদ্ভব প্রসঙ্গে বাদী পৌর ডিগ্রি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সামসুল আলম সেলিম শাহজাহান আলীর নিয়োগ প্রসঙ্গে হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতির কাছে নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাখ্যা না পেয়ে সমাজের সচেতন ব্যক্তি হিসেবে বাদী এ মামলা দায়ের করেন।
১৯৮৪ সালে চুয়াডাঙ্গায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়। বর্তমানে শহরের মুসলিমপাড়ায় এর ক্যাম্পাস। এখানে বর্তমানে ২৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অবাক হলেও সত্য যে ৩০ বছরের পুরোনো এ প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত একটি ব্যাচও বের হয়নি। বর্তমানে দ্বিতীয়বর্ষের ক্লাস চলছে। এদিকে ১৯৮৩ সালে পৌর ডিগ্রি কলেজের সূচনা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে।
বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের নিয়মানুযায়ী সকাল ন’টা থেকে বিকেল পাঁচটার মধ্যে ক্লাস রুটিন সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিপত্র অনুযায়ী সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মকালীন সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত নির্ধারণ করা রয়েছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী জানান, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। একই প্রতিষ্ঠানে উপাধাক্ষ্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিদর্শক সাজেদুর রহমান, মহিলা কলেজের শিক্ষক ইকবাল হাসান ও পৌরসভার আদায়কারী সাখাওয়াত হোসেন এবং চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শাহাদাত আলী এখানে দায়িত্ব পালন করছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে সম্মানি হিসেবে তিনি এক হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। এছাড়া তিনি আরো জানান, হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সকাল সাতটা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত ক্লাস হয়ে থাকে।