চলে গেলেন আনোয়ার হোসেন

 

মাথাভাঙ্গা অনলাইন ঃ বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা আনোয়ার হোসেন আর নেই। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।। নিউমোনিয়া, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন এ অভিনেতা। আনোয়ার হোসেনের বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
আনোয়ার হোসেনের মরদেহ রাজধানীর কলাবাগানে ডলফিন গলিতে তার নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ১৮ আগস্ট স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কয়ার হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে দেখতে যান। এ সময় তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ১০ লাখ টাকা অনুদানও দেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য আর বিদেশ যাওয়া হলো না এই অভিনেতার।

আনোয়ার হোসেনের জন্ম ১৯৩১ সালে ময়মনসিংহে। ১৯৫০ সালে জামালপুর সরকারি স্কুল থেকে এসএসসি এবং পরে আনন্দমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৫১ সালে আশকার ইবনে শাইখের ‘পদক্ষেপ’ দিয়ে অভিনয় জীবনের শুরু এই অভিনেতার।

 

১৯৫৮ সালে ‘তোমার আমার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন তিনি। তার জনপ্রিয় চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ ‘কাঁচের দেয়াল’ (১৯৬৩), ‘বন্ধন’ (১৯৬৪), ‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০), ‘রংবাজ’ (১৯৭৩), ‘ধীরে বহে মেঘনা’ (১৯৭৩), ‘রুপালী সৈকতে’ (১৯৭৭), ‘নয়নমণি’ (১৯৭৭), ‘নাগর দোলা’ (১৯৭৮), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘সূর্য সংগ্রাম’ (১৯৭৯) ইত্যাদি।

অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বাচসাস পুরস্কার, পাকিস্তানের নিগার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বাংলা চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৫ সালে একুশে পদকও পান তিনি। ২০১০ সালে তাকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়।

আনোয়ার হোসেনের চার ছেলে ও এক মেয়ে। চার ছেলের মধ্যে বড় ছেলে থাকেন সুইডেনে। অন্য তিন ছেলে থাকেন আমেরিকায়।

 

আনোয়ার হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ অ্যাডভোকেট, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী প্রমুখ ।

পৃথক পৃথক শোক বাণীতে তারা বলেন, আনোয়ার হোসেন ছিলেন একজন অনন্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি চলচ্চিত্র অঙ্গনের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার মৃত্যুতে চলচ্চিত্র অঙ্গনে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা পূরণ হওয়ার নয়। বাংলা চলচিত্র ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণে মরহুমের অবদান বাংলাদেশের জনগণ আজীবন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তারা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।