ঝিনাইদহে আওয়ামী লীগের জনসভায় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী

ঝিনাইদহ অফিস: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, জনগণের সেবা করতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও দেশকে জঙ্গিদের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়তে সন্ত্রাস, জঙ্গি ও দুর্নীতিমুক্ত একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গঠনে, আ.লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং বিএনপি জামায়াত-শিবির-হেফাজতের দেশ ব্যাপিতাণ্ডব, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ, সন্ত্রাস, অত্যচার, নির্যাতন, গ্রেনেডহামলা, মসজিদে আগুন, কোরআন পোড়ানো, মানুষ মারা, দুর্নীতি, লুটপাট, সন্তাস ও নৈরাজ্য রুখতে এবং  রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে আরেকটিবার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করতে ও উন্নয়ন, অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে সুযোগ দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে তেমনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও কেউ ঠেকাতে পারবে না। আগামীতে বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতে ইসলাম ক্ষমতায় এলে এবং এসব বন্ধ করে দিয়ে দেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে, হাওয়াভবনের মতো নতুন ভবন খুলে দুর্নীতি আর দেশকে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিয়ে, হাত কাটা, পা কাটা, চোখ তুলে ফেলার রাজনীতি করবে। সেটাই হবে বিএনপির নেত্রীর ভিন্ন ধর্মী রাজনীতি। গতকাল বিকেলে পায়রা চত্বরে এক জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা আ.লীগের সভাপতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পাদক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলি সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়ার চৌধুরী এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী কেন্দ্রীয় কমিটি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তফা মোহাম্মদ ফারুক এমপি, ডাকসুর সাবেক ভিপি আক্তারুজ্জামান, নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য গোলাম মাওলা নকশবন্দি, কেন্দ্রীয় কমিটি কার্যনির্বাহী সদস্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এসএম কালাম হোসেন। জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে শহরের পায়রা চত্বরে বিকেল ৩টার দিকে জনসভায় সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের নেতৃত্বে স্বরণকালের বিশাল ৱ্যালি জনসভায় যোগ দেয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার প্রায় ১৫হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুপুর ২টার দিকে নসিমন, করিমন, আলমসাধু ও মোটরসাইকেলযোগে উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের শহরস্থ বাসভবনের সামনে সমবেত হয়। বিকেল ৩টা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাসের নির্দেশে ৱ্যালি করে জনসভায় যোগ দেয়। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ-৩ আসনের সংসদ মো. শফিকুল আযম খান চঞ্চল এমপি, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ আব্দুল মান্নান এমপি, মহিলা সংসদ সদস্য নূরজাহান বেগম, উপজেলা চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ জেলা আ.লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু প্রমুখ। পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকাচ আলী, উপ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যুবলীগের অন্যতম নেতা নুরে আলম বিপ্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুর ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মিথুন, জেলা কৃষক লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মধু বিশ্বাসসহ আওয়ামী লীগ ও তার অংগ সংগঠনের ৫০/৬০হাজার জনতা। গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের পাঁচ বছরে শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন, সুশাসন, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অনন্য সাধারণ অগ্রগতি ও যুগান্তকারী সাফল্য অর্জিত হয়েছে তার জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে আর বিএনপি জামায়াত-শিবিরের অশুভ জোট আন্দোলনের নামে অব্যাহত হত্যা, সন্ত্রাস, হরতাল, নৈরাজ্য, মিথ্যাচার, অপপ্রচার অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির দেশবিরোধী ধ্বংসাত্মক তৎপরতা ও দেশবাসীর মনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপপ্রয়াস সম্পর্কে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দেশে পানির দামের চেয়ে সারের দাম কম। একটি মাম পানির বোতল ২০ টাকা। কিন্তু এক কেজি ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দেশে সার বিপ্লব, বই বিপ্লব ও বিদ্যুত উন্নয়নে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। এখন ভারতের সাথে মামলায় জিততে হলে আবারো নৌকায় ভোট দিতে হবে। শেখ হাসিনা মানেই চাকরি, শেখ হাসিনা মানেই বিদ্যুত, শেখ হাসিনা মানেই উন্নয়ন এ কথা উল্লেখ করে মতিয়া বলেন, আমরা মুসলমান হিসেবে জনগণের কাছে দেয়া ওয়াদা পূরণ করেছি। আমাদের নিয়ত ভালো বলে সব কাজেই বরকত আছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে দেশের মানুষ শান্তি, উন্নয়ন ও প্রগতির আশায় নৌকায় ভোট দিয়েছিলো, আমরা বলবো না যে দুধের নহর বইয়ে দিয়েছি। তবে মানুষকে আমরা সেবা, শান্তি ও উন্নয়ন দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমরা ২৮ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলাম। আজ দেশ খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জন করেছে। গত দু বছরে আমরা চাল আমদানি করিনি। আমরা ধান বীজ ও পোলাওয়ের চাল রপ্তানি করেছি। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে বলেন, মহাজোট সরকার দ্রব্যমূল্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে এনেছে। চালের দাম ৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রেখেছে। বিদ্যুত উন্নয়নে রেকর্ড সৃষ্টি করেছি। তিনি জামায়াত, হেফাজত ও ড. ইউনূসের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ,এরা দেশকে পিছিয়ে নিতে চায়। আমার আর পেছনে যেতে চায় না। আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। মতিয়া চৌধুরী তারেক রহমান ও কোকোর সমালোচনা করে বলেন, মা ভালো হলে সন্তানও ভালো হয়। মায়ের কারণে সন্তানরাও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশের টাকা চুরি করে বিদেশে পাচার করেছে। এফবিআই এ ঘটনার সাক্ষি।