মাথাভাঙ্গা মনিটর: সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের অনুমোদন চাইবেন বলে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার হোয়াইট হাউজের রোজ গার্ডেনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবামা বলেন, সিরীয় সরকারের বিভিন্ন স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা করা উচিত। তবে এ বিষয়ে কংগ্রেসে আলোচনা ও ভোট হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। দামেস্কে যা ঘটছে তার প্রতি আমরা চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না। ওবামা বলেন, সিরিয়ায় সীমিত আকারে এবং স্বল্প সময়ের জন্য অভিযান চালানো হবে। ভবিষ্যতে যাতে রাসায়নিক হামলা না হয় সেজন্য তা করা হবে। আগামীকাল আগামী সপ্তায় বা নিকট ভবিষ্যতে এ হামলা হতে পারে বলে জানান তিনি। জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্র এ অভিযান চালাবে বলেও জানান ওবামা। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সিরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর পক্ষে অবস্থান নেয়ার জন্য কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। ওবামা বলেন, এক জাতি হিসেবে আমরা সামনে এগোনোর জন্য প্রস্তুত-এ বার্তা বিশ্বের কাছে পাঠানোর জন্য আজ আমি কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের পরবর্তী অধিবেশন বসার কথা রয়েছে। গত শুক্রবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে গত ২১ আগস্ট সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের উপকণ্ঠে রাসায়নিক অস্ত্র হামলায় এক হাজার চারশ ২৯ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
ওই হামলার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত বাহিনীকে দায়ী করেন গোয়েন্দারা। এরপর প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, সিরীয় সরকারের বিরুদ্ধে সীমিত আকারে সামরিক অভিযান চালানোর প্রক্রিয়া নিয়ে পরিকল্পনা করছেন তারা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন দাবি করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাসায়নিক হামলার জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করা পরিহাসমাত্র। দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ থাকলে তা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সিরিয়ায় হামলা চালানোর আগে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী হিসেবে অভিযান পরবর্তী সিরিয়ার পরিস্থিতি বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান পুতিন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন সিরিয়ায় হামলা চালানোর পক্ষে জোরালো অবস্থান নিলেও দেশটির পার্লামেন্টে ভোটে হামলা না চালানোর পক্ষে রায় হওয়ার পর এ বিষয়ে আটকে যান। অবশ্য সিরিয়ায় সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স ও তুরস্ক। তবে এ হামলা চালানোর বিপক্ষে মত দিয়েছে ফ্রান্সের বেশিরভাগ নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যেও তাদের দেশের নতুন কোনো যুদ্ধে জড়ানোর ব্যাপারে অনীহা রয়েছে। এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ২০ শতাংশ মার্কিনি সিরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন। এদিকে গত চার দিন রাসায়নিক অস্ত্রের হামলাস্থল পরিদর্শন করে গতকাল শনিবার সকালে সিরিয়া ছেড়েছে জাতিসংঘের অস্ত্র পরিদর্শক দল। তাদের প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করবে সিরিয়ায় অভিযান বিষয়ে অনেক দেশের অবস্থান।