দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দরটি পুনরায় চালু হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে আগামীকাল ২৪ আগস্ট বিকেলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। যদিও উদ্বোধন করা হচ্ছে বলেই কিছুদিন ধরে প্রচার-প্রচারণা চলছে। উদ্বোধনের সেই শুভক্ষণের অপেক্ষার পালা কবে শেষ হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা কঠিন। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন মূলত সেই শুভক্ষণের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া। সেই শুভক্ষণের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষার প্রহর গুনছে এলাকাবাসী।
অপেক্ষার প্রহর পেরিয়ে বেলা, বেলা গড়িয়ে দিন। তারপর মাস, বছর। বছরের পর বছর পেরিয়ে প্রায় দেড় যুগ ধরেই স্থলবন্দরটি চালু হচ্ছে হচ্ছে অবস্থায়। শেষ পর্যন্ত নৌপরিবহন মন্ত্রী স্থলবন্দরটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন। এর আগে স্থলবন্দরটির রাষ্ট্রীয় অনুমোদন মিলেছে। সেই অনুমোদনই কিন্তু সব নয়। সরকার রাজস্ব বিভাগকে রাজস্ব আদায়ের জন্য দৌলৎগঞ্জে লোকবল নিয়োগ করবে, অবকাঠামোও নির্মাণ করতে হবে সরকারকে। ভারতের পূর্বের দেয়া সবুজ সঙ্কেতটি ঝাপসা হয়ে পড়েছে। ওই সঙ্কেতের ওপর থেকে ধুলো সরিয়ে স্বচ্ছ করতে হবে। তারপরই না উদ্বোধন। তবে ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের মধ্যদিয়ে এখন স্পষ্ট, সেই শুভদিন আর বেশি দিন দূরে নয়।
স্থলবন্দর শুধু এক দেশের সিদ্ধান্তেই স্থাপন করা যায় না। পড়শি দেশের সম্মতি থাকতে হয়, থাকতে হয় উভয় দেশের যোগাযোগ সুবিধা ও অবকাঠামোসহ লোকবল। যেহেতু চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের দৌলৎগঞ্জ ও ভারত পশ্চিমবঙ্গের মাঝদিয়া স্থলবন্দরটি পাকিস্তান আমলে চালু ছিলো। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা যে আছেই তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। তাছাড়া দু দেশের যোগাযোগ সুবিধা বিবেচনায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের চেয়ে নানাভাবেই দৌলৎগঞ্জ-মাঝদিয়া স্থলবন্দরটিতে রয়েছে মালামাল আমদানি ও রপ্তানির বাড়তি সুবিধা। জ্বলানি খরচ কমবে অনেক। সে হিসেবে আমদানি করা দ্রব্য সামগ্রীর মূল্যহ্রাস যেমন সম্ভব, তেমনই আমদানি রপ্তানিকারকদেরও হবে সাশ্রয়। অতো সুবিধার পরও কেন এতোদিন দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দরটি চালু হলো না? নানা সমস্যা তো ছিলোই। কর্তৃত্বের লড়াই-বড়াইয়ের চেয়ে পূর্ণতাই এখন প্রত্যাশিত।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দরটির কার্যক্রম দ্রুত চালু হোক। নৌপরিবহন মন্ত্রীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সফল হোক, স্বার্থক হোক। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর নৌপরিবহন মন্ত্রীসহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এ স্থলবন্দরটির কার্যক্রম দ্রুত চালু করার বিশেষ উদ্যোগ নেবেন বলে আমাদের বিশ্বাস। এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে দৌলৎগঞ্জ স্থলবন্দরটি অন্যতম সহায়ক হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পূরণ হোক এলাকাবাসীর স্বপ্ন। দ্রুত আসুক সেই শুভক্ষণ।