আলমডাঙ্গা ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা ভায়া হাটবোয়ালিয়া রুটের যাত্রীবাহী বাস তল্লাশি করে বিজিবির উথলী বিশেষ ক্যাম্প ১০ লাখ টাকা মূল্যের আধা কেজি হেরোইন উদ্ধার করেছে। গতকাল রোববার সকালে এ অভিযান চালিয়ে হেরোইনসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হলেও পরবর্তীতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বিজিবির কুষ্টিয়া সেক্টরের স্টাফ অফিসার মেজর নাহিদুজ্জামান নাহিদের নেতৃত্বে উথলী বিশেষ ক্যাম্প রাতভর অভিযান চালিয়ে গতকাল সকালে আলমডাঙ্গা উপজেলার গৌরিহৃদ গ্রাম থেকে চলন্ত বাস থামিয়ে ওই হেরোইন উদ্ধার করে।
জানা গেছে, বিজিবি’র উথলী বিশেষ ক্যাম্প গোপনসূত্রে জানতে পারে ভোরের আলো নামের ১টি বাসে হেরোইনের বড় চালান আলমডাঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ সংবাদ পেয়ে বিজিবি’র কুষ্টিয়া সেক্টরের স্টাফ অফিসার মেজর নাহিদুজ্জামান নাহিদের নেতৃত্বে উথলী বিশেষ ক্যাম্প শনিবার রাতব্যাপি অভিযান পরিচালনা করে। গতকাল ভোর ৬টা ২০ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা থেকে আলমডাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে আসা ভোরের আলো নামের ১টি যাত্রীবাহী বাস ৭টা ২০ মিনিটের দিকে ভাংবাড়িয়ার নিকটবর্তী গৌরিহ্রদ নামক গ্রামে পৌঁছুলে বিজিবি বাসের গতিরোধ করে। এ সময় বাসের ড্রাইভার চুয়াডাঙ্গা দৌলোতদিয়াড়ের মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে নাসির উদ্দিন, সুপারভাইজার মেহেরপুর জেলার বাড়াদী গ্রামের আজগারের ছেলে মুকুল ও ড্রাইভারের পাশে বসে থাকা ভিন্ন একটি বাসেরচালক দৌলতদিয়াড়ের আইজউদ্দিন মণ্ডলের ছেলে আতাউর রহমান বিজিবি’র সাথে প্রচণ্ড বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যরা বাসের ভেতরে প্রবেশ করে বাসের একটি শূন্য সিটের ব্যাক কভার কেটে লুকিয়ে রাখা হেরোইনের বাঁশকাগজ ও কসটেপ দিয়ে মোড়ানো ১টি প্যাকেট উদ্ধার করেন। পরে যাত্রীসহ বাসটি আলমডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসা হয়। সে সময় মেজর নাহিদ সাংবাদিকদের বাসটি ভেতরে ডেকে নিয়ে হেরোইন রাখার সিটটি দেখান। বাসের সকল সিটের ব্যাক কভার অক্ষত থাকলেও শুধু ওই বিশেষ সিটটির ব্যাক কভার খুলে হেরোইনের প্যাকেট ঢোকানো হয়েছিলো। যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হলেও বাসের ড্রাইভার নাসির, ভিন্ন বাসের ড্রাইভার আতাউর, সুপারভাইজার মুকুল ও হেলপার দামুড়হুদার বিষ্ণপুর গ্রামের সমসের আলীর ছেলে নাজমূল আলিমকে গ্রেফতার করে থানায় সোপর্দ করা হয়। বাসটিও (মৌলভীবাজার-জ-১১-০১৮২) থানায় আটকে রাখা হয়।
থানা অফিসার ইনচার্জ মনির উদ্দিন মোল্লার সামনে মেজর নাহিদুজ্জামান নাহিদ উদ্ধারকৃত হেরোইনের প্যাকেট কেটে ৫টি পলিথিনে ভর্তি হেরোইন বের করেন। যার আনুমানিক মূল্য ১০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে। পরে বাসের ড্রাইভারসহ গ্রেফতারকৃত ৩ জনকেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ড্রাইভার থানা চত্বর থেকে বাস নিয়ে চলে যাওয়ার ঘটনা অনেকেই বাঁকা চোখে দেখছেন। তবে এ সম্পর্কে মোবাইলফোনে মেজর নাহিদুজ্জামান নাহিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলা বাস-ট্রাক শ্রমিক সংগঠনের অনুরোধে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বাসটির গ্রেফতারকৃত ড্রাইভারদ্বয় ও সুপার ভাইজার হেরোইন বহনের বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করলেও তাদের জড়িত থাকার দাবি সর্বমহলে বেশ উচ্চকিত। বিজিবি, পুলিশসহ উপস্থিত ব্যক্তিদের অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, ড্রাইভার ও সুপারভাইজারকে ছাপিয়ে হেরোইনের এতো বড় প্যাকেট কোনোভাবেই বাসের সিটের কভার খুলে ঢোকানো সম্ভব নয়। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি নেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত মামলা করা হয়নি। শুধু থানায় জিডি করে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।