প্রকৃত দোষী শনাক্তে সুষ্ঠু পুলিশি তদন্ত কাম্য

 

চুয়াডাঙ্গা শহরে একই রেজিস্ট্রেশন নম্বরের দুটি মোটরসাইকেল চলা দেখে চমকে ওঠা কয়েকজনই প্রথমে দৈনিক মাথাভাঙ্গায় খবর দেন। সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর দুটি মোটরসাইকেলের একটির মালিক চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি বলেছেন, একটি চক্র তাকে ওই জাল নম্বরটি দিয়েছে। পুলিশ মামলার আসামিদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গার এক কর্মচারী জাকির হোসেনকে ওই মামলায় আসামি করায় সামাজিক সংস্কৃতিক সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের অনেকেই নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে নিন্দা জানানোর পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করারও অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত এ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাকির হোসেন সাহিত্য, সাংস্কৃতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত। পত্রিকায় কলামও লেখেন তিনি।

একজন চিকিৎসক অবশ্যই শিক্ষিত এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তিনি মোটরসাইকেল কিনে এমন কার মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করালেন যে তার রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ কাগজপত্র ভুয়া দিলো? যার বা যাদের মাধ্যমে তিনি রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন তাদের তিনি মামলার আসামি করেছেন। পুলিশ মামলা হাতে পাওয়ার সাথে সাথে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করে। বর্তমানে তদন্তাধীন মামলাটি সচেতনমহলে আলোচিত বটে। কেননা, একজন চিকিৎসক এক মেরামতকারীর মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা দেন। যে মেরামতকারীর মাধ্যমে তিনি টাকা দেন সেই মেকানিক হিরা শহরে বেশ পরিচিত। টাকা নেয়ার সময় বিআরটি’র মাস্টাররোলে কাজ করা মনিরুলও উপস্থিত ছিলেন। যখন চিকিৎসক নিশ্চিত হলেন তার মোটরসাইকেলে লাগানো রেজিস্ট্রেশন নম্বরটি ভুয়া তখন হিরাকে ধরলেন, হিরা জানালেন বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গা অফিসেরই কয়েকজনকে রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। পুলিশ মামলা নেয়ার পর বাদীর বক্তব্য বিশ্বাস করেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। তদন্ত চলছে। তদন্তকর্তার বুদ্ধিদীপ্ততায় নিশ্চয় প্রকৃত দোষী শনাক্ত হবে, নির্দোষ ব্যক্তি হয়রানি থেকে রেহায় পাবেন। আইন এটা নিশ্চিত করারই পুনঃপুনঃ তাগিদ দেয়।

চিকিৎসক নিজে ব্যবহারের জন্য মোটরসাইকেল কিনলেন, মেকানিকের মাধ্যমে মেকানিকের দোকানে রেজিস্ট্রেশন করানোর জন্য টাকা দিয়ে প্রতারিত হলেন। বিআরটিএ চুয়াডাঙ্গার মাস্টাররোলে কয়েকজনকে আসামি করার পাশাপাশি একজন কর্মচারীকে আসামি করার কারণে বিরূপ সমালোচনাই শুধু শুরু হয়নি, সুধীমহলের একাংশ নিন্দা জানিয়েও বিবৃতি দিয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন ওঠে, একজন কর্মচারী যিনি দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন তিনি কি সামান্য রেজিস্ট্রেশনের টাকা আত্মসাতের জন্য ভুয়া সিলিপ বা নম্বর দেবেন? তাও আবার চুয়াডাঙ্গারই নম্বর। মোটরসাইকেল মেকানিক অবশ্য যার হাতে টাকা তুলে দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দেয়ার জন্য বলেছিলেন, তিনি অস্থায়ী কর্মচারী। মেকানিক হিরা ওই অর্থের জন্য ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকারীদের সহযোগী হবেন বলে যেমন বিশ্বাস করা কঠিন, তেমনই বিআরটিএ কর্মচারী জাকির হোসেন সরকারি চেয়ারে বসে অতোটা নির্বোধ হওয়ার বিষয়টিও বিশ্বাস করা কঠিন। ফলে প্রকৃত দোষীকে শনাক্ত করতে সুষ্ঠু তদন্ত কাম্য।