চুরির কৌশলেও এখন অভিনবত্ব : সাবধানের মার নেই

চুরি মানে না বলে পরদ্রব্য নেয়া। যারা চুরি করে তাদের চোর বলে। চোরেরও আবার রকম-ফের আছে। সিঁধেল চোর, গরুচোর, গ্রিল কাটা চোর, ছিঁচকে চোর, ভদ্র চোরসহ হরেক নামের হরেক কিসিমের চোর সমাজে ঘুর ঘুর করে। নারী চোরের উৎপাতও দিন দিন বাড়ছে। সুযোগ পেলেই শুধু নয়, বুদ্ধি খাঁটিয়ে সুযোগ সৃষ্টি করেও ওরা এখন চুরি করছে। কৌশলেও আনছে অভিনবত্ব। ফলে সাবধান!

সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরের অদূরবর্তী একটি সোনার দোকানে ঢুকে তিন মহিলা চোর দোকানিকে বোকা বানিয়ে সোনার চেন ভর্তি একটি প্যাকেট চুরি করে চম্পট দেয়। কয়েকদিন আগে একই এলাকার একটি শাড়িকাপড়ের দোকানে খদ্দের সেজে তিন নারী চোর অভিনব কৌশলে থ্রিপিসের একটি টুপলি চুরি করে। চুরির দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় ধরাও পড়ে। চোর ধরা পড়েনি। এরই মাঝে গতপরশু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জ এলাকার একটি সিমেন্টের দোকানে ভদ্রবেশে খদ্দের সেজে দু চোর দোকানের কিশোর কর্মচারীকে ধোঁকা দিয়ে চুরি করেছে দু লাখ টাকা। ক’দিন আগে একইভাবে দামুড়হুদার লোকনাথপুরের একটি দোকানেও চুরি হয় বলে দোকানি জানিয়েছেন। আর পাড়া-মহল্লায় ছিঁচকে চোর? ওটা তো লেগেই আছে। নেশাখোর চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ চুয়াডাঙ্গা সবুজপাড়া, সাদেক আলী মল্লিকপাড়াবাসী তো রাত জেগে পালাক্রমে পাহারার মাধ্যমে চুরি বন্ধ করেছে। আর মাঠ থেকে শ্যালোইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ চুরির কারণে কৃষকদের স্বস্তিতে ঘুম নেই। গোডাউনে ট্রাক ভিড়িয়ে চাল চুরিরও উদাহরণ রয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। প্রসঙ্গত প্রশ্ন উঠতেই পারে, তা হলে পুলিশ কি করে? দেশের বাস্তবতা আর চোরের উৎপাত এবং পুলিশের অপ্রতুলতা বিশ্লেষণে পুলিশকে দোষারোপ অনেকটাই বাতুলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খানেকটা সব দোষ নন্দ ঘোষের ওপর দেয়ার মতোই। যদিও চুরি রোধে, চোর ধরার দায়িত্ব পুলিশেরই। কেননা, সমাজের মানুষ সমাজে পুলিশি ব্যবস্থা চালু করেছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের নিমিত্তেই। ফলে অপ্রতুলতা কিংবা অন্য কোনো অজুহাত খাড়া করলেও দায় এড়াতে পারে না পুলিশ।

পুরোনো কথা পেঁচিয়ে না বললে, যে বিষয়টি দাঁড়ায় তা হলো- উন্নয়নশীল দেশের সর্বক্ষেত্রে সকলেরই চলার পথে আচমকা বাঁক। সামান্য অসতর্কতাই ঘটে যেতে পারে সর্বনাশ। ফলে সাবধানতার বিকল্প নেই। সবসময়ই মনে রাখতে হবে- এখানে মাঝে মাঝে চোর আসে, ঘুর ঘুর করে, সুযোগ খোঁজে। ফলে নিজেদের সজাগ হওয়ার পাশাপাশি পুলিশেরও চুরি রোধে, চোর ধরতে আন্তরিক হতে হবে।