‘সমবায় উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন

??????????

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: ‘সমবায় উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে ৪৪তম জাতীয় সমবায় দিবস উপলক্ষে ৱ্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে দামুড়হুদায় জাতীয় সমবায় দিবসে কোনো সমবায় উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ না করায়, ক্লাস বন্ধ রেখে শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে করানো হয় ৱ্যালি।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য ৱ্যালি বের করা হয়। ৱ্যালিতে জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, সহকারী পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহ, পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন। ৱ্যালিটি শহীদ হাসান চত্বর প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা সমবায় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। ৱ্যালি শেষে জেলা সমবায় ব্যাংক ভবনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। জেলা সমবায় ব্যাংকের সভাপতি নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা, সহকারী পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহ, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. সামশুজ্জোহা ও জেলা সমবায় অফিসার মুনজুর কাদের। জেলা সমবায় কার্যালয়ের পরিদর্শক হারুন অর রশিদের সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার সৈয়দা নাফিজ সুলতানা, টুকটুক তালুকদার, মুসফিকুল আলম হালিম, আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা সমবায় অফিসের প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা সমবায় অফিসার মুনজুর কাদের। প্রধান অতিথি বলেন, আমাদের দেশ আজ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতের বেড়া ডিঙিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আজ তিনি যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে অনেক আগেই এ দেশ উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতো। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষক ভাইয়েরা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে অক্লান্ত পরিশ্রম না করতেন তাহলে তা সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে বিভিন্ন সফলতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আ.লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর চাকরিজীবীরা যে সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ছুফি উল্লাহ, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. সামশুজ্জোহা প্রমুখ। সভা শেষে এক সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা অডিটরিয়াম থেকে ৱ্যালি শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আ.হ.ম ডা. শামীমুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিআরডিবি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মহিদ, উপজেলা সমবায় অফিসার আব্দুল জলিল, উপজেলা অফিস সুপার আব্দুর রউফ, উপজেলা সমবায় সহকারী পরিদর্শক কাবিল হোসেন ও আবু হাসেম। মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম মাস্টারের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন সমবায় অফিস সহকারী ইয়াকুব আলী, বিভিন্ন সমিতির সভাপতি সম্পাদকের মধ্যে সিরাজুল ইসলাম, হাসান, আব্দুস সালাম, কালাম, ওমর আলী, স্বপন, আব্দুর রব, কামাল উদ্দিন, হাসান আলী, অধিবাসী সমিতির শ্যামল কুমার সরকার, রাজ কুমার সরকারসহ ৩টি কেন্দ্রীয় সমিতিসহ ৭৩টি সমিতির সদস্য ও সমবায় অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চরম অব্যবস্থাপনার মধ্যদিয়ে অনেকটা দায়সারাভাবে ৪৪তম জাতীয় সমবায় দিবস পালন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টায় ৱ্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ১২১টি সমবায় সমিতির প্রায় ৭ হাজার সমবায় উদ্যোক্তার মধ্যে তেমন কেউ উপস্থিত না থাকায় ক্লাস বন্ধ রেখে কানন বিদ্যাপীঠের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ৱ্যালি করানো হয়। ৱ্যালি শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান মাও. আজিজুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু ও উপজেলা সমবায় অফিসার খন্দকার জহিরুল ইসলাম।
এদিকে ক্লাস বন্ধ রেখে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ৱ্যালি করানোসহ চরম অব্যবস্থাপনার বিষয়ে অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু বলেন, এবারের সমবায় দিবস উদযাপনে চরম অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হয়েছে। উপজেলার ১২১টি সমবায় সমিতি থেকে ২১ জনও উপস্থিত নেই। এছাড়া ক্লাস বন্ধ রেখে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ৱ্যালি করানোটা দুঃখজনক। এ বিষয়ে হাতিভাঙ্গা ইউনিয়ন বহুমুখি সমবায় সমিতির সভাপতি আক্তারুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, সভাপতি হিসেবে আমার নাম ব্যানারে লেখা থাকলেও আমাকে সভাপতিত্ব করতে দেয়া হয়নি এবং আমাকে কোনো বক্তব্য দেয়ারও সুযোগ দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় অফিসার খন্দকার জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি নতুন এসেছি। তেমন কাউকেই চিনি না। সমবায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে তেমন কেউ উপস্থিত না হওয়ায় অবশেষে ইউএনও’র পরামর্শেই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে ৱ্যালি করানো হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, উপজেলার একটি দফতর ছাড়া কোনো দফতরের কেউ উপস্থিত না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, সমবয় দিবস উপলক্ষ্যে উপজেলা ক্যাম্পাসে জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শহরে বর্ণাঢ্য ৱ্যালি বের করা হয় এবং উপজেলা মিলনায়তনে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ইউএনও নুরুল হাফিজের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আ. লতিফ অমল। বক্তব্য রাখেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়েশা সুলতানা লাকি, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন, উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও সমবায় অফিসার মোতাহার হোসেন। সমবায়ীদের মধ্যে বাবুল আক্তার, শফিকুল ইসলাম ও সাগরিকা ঝুমুর বক্তব্য রাখেন।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, দিবসটি উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকাল ৯টার দিকে জেলা সমবায় অফিস চত্বর থেকে মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য ৱ্যালি বের করা হয়। ৱ্যালিটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গিয়ে শেষ হয়। জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম, জেলা সমবায় অফিসার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হেমায়েত হোসেনসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির সদস্যরা ৱ্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। ৱ্যালি শেষে সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন জাতীয় পতাকা ও জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম সমবায় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলন শেষে মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হেমায়েত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমার উজ্জামান, জেলা মৎস্যজীবী সমবায় প্রতিনিধি সহিদ সাদেক হোসেন বাবুল, সদর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রত্নারাণী পাল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা কাজী মিজানুর রহমান, হরিরামপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি. প্রতিনিধি আমিরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জেলার শ্রেষ্ঠ ৫ সমবায় সমিতি ও সমবায়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন জেলা সমবায় অফিসের পরিদর্শক মাহবুবুল হক মন্টু।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় মুজিবনগর উপজেলা সমবায় কার্যালয় ও সমবায়ীদের যৌথ উদ্যোগে উপজেলা চত্বরে জাতীয় ও সমবায় পতাকা উত্তোলন শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৱ্যালি বের করা হয়। ৱ্যালিটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মুজিবনগর উপজেলা হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় উপজেলা সমবায় অফিসার ফসিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান গুলনাহার বেগম ও সমাজসেবা অফিসার তৌফিকুর রহমান প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিবসটি উপলক্ষে জেলা সমবায় দফতর ও সমবায় ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে গতকাল সকালে ঝিনাইদহ শহরের পুরাতন ডিসিকোর্ট চত্বর থেকে ৱ্যালি বের হয়। ৱ্যালি শেষে ঝিনাইদহ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তেন অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এএসএম মহিউদ্দীন খাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল ওয়াহেদ জোয়ারদার, ঝিনাইদহ পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ, জেলা সমবায় অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, সিপিডিপির সহকারী পরিচালক গাজী জহুরুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম সাগর, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের সভাপতি আব্দুল গফুর প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান।