মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ২৬টি পদের ২১টিই শূন্য

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: ছাব্বিশ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৫ চিকিৎসক। সরেজমিনে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে এমন চিত্রটিই দেখা গেছে। এ কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেপুটেশনে রয়েছেন।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউএইচএ, আরএমওসহ ১৪ চিকিৎসক ও ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১২ জনসহ মোট ২৬ চিকিৎসক থাকার কথা। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৪ জনের মধ্যে ইউএইচএ, আরএমওসহ আছেন মাত্র ৫ চিকিৎসক। ৯ জন স্বাস্থ্য অধিদফতরের আদেশে ডেপুটেশনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে কর্মরত।

অন্যদিকে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ১২টির মধ্যে ৬টি পদ শূন্য, বাকি ৬টির মধ্যে ৫টি রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশে ডেপুটেশনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে কর্মরত। অর্থ্যাত ২৬ পদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি ১৪ জন আছেন ডেপুটেশনে। ডেপুটেশনে থাকা চিকিৎসকরা হলেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজি ডা. বসির উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা আক্তার, ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. কামরুন নাহার, ডা. নুর-এ-নাসরীন, ডা. নাজনীন হাবিব, বহলবাড়িয়া ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. অনামিকা অধিকারী, কুর্শা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. আনিছুর রহমান, আমবাড়িয়া ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. তামিমা আফরোজ, মালিহাদ ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. শামীম আরা বেগম, বারুইপাড়া ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. এজেএম মুছাদ্দেক রেজা।

বছরের পর বছর ওই সকল চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য অধিদফতরের আদেশে ডেপুটেশনে থাকলেও ডেপুটেশন বাতিল করে স্ব-স্ব স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নাই।

নারী ও শিশু বান্ধব বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন থাকার পরও এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অর্ধযুগ ধরে গাইনী ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর পোষ্টিং নাই। চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে সাড়ে তিন লাখ জনসংখ্যার এ উপজেলার সরকারি স্বাস্থ্য সেবার এ প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা সেবা রীতিমতো ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসক সঙ্কটের কারণে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রাকিব, মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদুল হাসান ও ডেন্টাল সার্জন ডা. এসএম সাজ্জাদুল ইসলাম এই তিনজনকে দিয়ে রাত্রীকালীন জরুরি সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি ৬ মাস আগে নষ্ট হয়ে গেলেও নতুন কোনো অ্যাম্বুলেন্স সংযুক্ত করা হয়নি। এ বিষয়ে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সেলিম হোসেন ফরাজী জানান, চিকিৎসক সঙ্কটের ব্যাপারে মিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ছাড়াও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউএনকে জানানো হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. নাজমুল ইসলাম জানান, ডাক্তার সঙ্কটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা পর্যাপ্ত ডাক্তারের ব্যবস্থা করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যতোদিন  ডাক্তার পর্যাপ্ত না পাওয়া যায় ততোদিন এভাবেই চলবে।