জীবননগর দোয়ারপাড়ায় আলোচিত খাস জমি ও বাড়ি নিয়ে আবারও সংঘর্ষ : নারীসহ উভয় পক্ষের ৪ জন আহত

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার দোয়ারপাড়া গ্রামে খাসজমি ও তার ওপরে অবস্থিত বাড়ি খরিদকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ যেন থামছে না। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু পক্ষ দু ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। কোনো পক্ষ যেন হারতে নারাজ। তারা দরিদ্র এ দুটি পরিবারকে নিয়ে এখন ইজ্জতের লড়াইয়ে লিপ্ত হয়েছেন। দিচ্ছেন উস্কানী। এ অবস্থায় জমি ও বাড়ি বিক্রেতা নুরজাহান বেগম এখন অনন্যপায়। এ অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বিরোধপূর্ণ ওই বাড়ির দখল নেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের নারীসহ ৪ জন আহত হয়েছে। আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, জীবননগর পৌর এলাকার দোয়ারপাড়ার হোসেন আলীর ভূমিহীন ছেলে ভ্যানচালক রুহল আমিন রুলা প্রতিবেশী শাহাজান আলীর স্ত্রী নুরজাহানের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকায় সরকারি খাস জমিসহ দু কামরা বিশিষ্ট একটি ঘর কেনেন। রুহুলকে জমিসহ ঘরের দখল বুঝিয়ে দেন নুরজাহান। এ ঘটনার কয়েক দিন পর নুরজাহান প্রতারণা করে একই জমি ও বাড়ি আবারও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় দোয়ারপাড়ার হোটেল শ্রমিক আজিবরের নিকট বিক্রি করেন। ফলে দু ক্রেতার মধ্যে ওই জমি ও বাড়ি নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। চলে দখলের প্রতিযোগিতা। একপর্যায়ে আজিবর পৌরসভায় অভিযোগ করেন। পৌরসভার পক্ষ থেকে চূড়ান্তভাবে উভয় পক্ষকে কাগজপত্র দেখানোর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু দিনের পূবেই রুহুলের বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের অভিযোগ এনে তাকে পরিবারসহ ওই বাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। বিক্রেতা নুরজাহান বলছেন, তিনি আজিবারের নিকট জমি ও বাড়ি বিক্রি করেছেন, রুহুলের নিকট ওই বাড়ি ও জমি বিক্রি করেননি। অন্যদিকে রুহুলের দাবি নুরজাহান এ জমি ও বাড়ি তার নিকট বিক্রি করে এখন মিথ্যা কথা বলছে। এ অবস্থায় রুহুল ও আজিবারের পক্ষ নিয়েছে প্রভাবশালী দুটি গ্রুপ। তারা দু পক্ষকে উস্কানী দিচ্ছে।
এ অবস্থার মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উভয়পক্ষকে আপস নিষ্পত্তির জন্য গত সোমাবার ডাকা হলে সেখানে নুরজাহানের পক্ষে গিয়ে হাজির হন পাঁচজন জনপ্রতিনিধি। দীর্ঘক্ষণে কোনো নিষ্পত্তি না হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা উভয়পক্ষকে আদালতে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
ভ্যানচালক রুহুল আমিনের অভিযোগ, আমরা গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বাড়িতে অবস্থান করা কলে জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ঘরের তালা খুলে দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এই সময় আমার মা পারুল বেগমকে (৫৫) মারপিট করে। আমার স্ত্রী মঞ্জুরা ও ছোট ভাই লিটনের স্ত্রী রিয়াকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। তারা এসময় বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। আহতদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে প্রতিপক্ষের অভিযোগ রুহুল আমিন ও তার পরিবারের সদস্যরা আকস্মিকভাবে জমি বিক্রেতা নুরজাহান বেগমের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়কভাবে মারপিট করে আহত করে। তাকেও উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হয়েছে।