চুয়াডাঙ্গায় যানবাহনের কাগজপত্র করাতে হয়রানির শিকার গ্রাহক : শিগগিরই সমাধানের আশ্বাস

স্থানীয় ব্যাংক টাকা নিচ্ছে না : গ্রাহক ছুটছেন ঢাকা-খুলনা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় নয় মাস ধরে যানবাহনের কাগজপত্রের জন্য টাকা জমা নিচ্ছে না কোনো ব্যাংক। ফলে যানবাহনের মালিক ও চালকেরা পাশের তিনটি জেলায় গিয়ে বিআরটিএ মনোনীত ব্যাংকে তা জমা দিচ্ছিলেন। তিন মাস ধরে সে সুযোগও বন্ধ। বর্তমানে জেলার যানবাহনের মালিক ও চালকদের টাকা জমা দেয়ার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে ছুটতে হচ্ছে। এই ভোগান্তির জন্য তারা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও ব্যাংকের খামখেয়ালিপনাকে দায়ী করেছেন।

যানবাহনের মালিক ও চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনা ও অপরাধ দমনে সরকার চলতি বছরের শুরুর দিকে সারাদেশে অবৈধ যান চলাচলের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করে। ফলে বৈধ কাগজপত্র করতে বিআরটি’র জেলা কার্যালয়ে ভিড় বাড়তে থাকে। নতুন যানবাহনের কাগজপত্র ছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সনদ, রুট পারমিট ইত্যাদির জন্য চুয়াডাঙ্গার গ্রাহকেরা আগে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) জেলা শাখায় টাকা জমা দিতেন। কিন্তু জেলায় বিআরটিএ মনোনীত একমাত্র ব্যাংকটি গত বছরের ১৫ নভেম্বর থেকে এ সেবা বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে জেলার গ্রাহকেরা পাশের মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ায় বিআরটি’র মনোনীত ব্যাংকে গিয়ে কাজ সেরে আসছিলেন। কিন্তু গত জুন থেকে ওই ব্যাংকগুলো চুয়াডাঙ্গার গ্রাহকদের টাকা গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে এখন খুলনা, রাজশাহী অথবা ঢাকায় গিয়ে টাকা জমা দেয়া ছাড়া উপায় নেই। এতে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মঈনুদ্দীন বলেন, ব্যাংকের অভাবে নিয়মিত ট্যাক্স টোকেন ও রুট পারমিটের ফি জমা দেয়া যাচ্ছে না। ওদিকে গাড়ি রাস্তায় বের করলেই ধরছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ট্রাফিক পুলিশ। তিনি নিজেও এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা জরিমানা গুনেছেন। গত মাসে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই পরিবহন নেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে তারা সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে জেলা অচল করে দেবেন।

জানতে চাইলে বিআরটি’র চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের মোটরযান পরিদর্শক এসএম সবুজ বলেন, বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিআরটি’র চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হতে পারে। বিআরটিএ বলছে, যানবাহনের কাগজপত্রের জন্য টাকা জমা দেয়ার স্বার্থে চুয়াডাঙ্গায় শিগগিরই বেসরকারি ব্যাংক এনআরবির কার্যক্রম চালু হচ্ছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৭ আগস্ট কালেক্টরেট ভবনে এনআরবি একটি বুথ স্থাপন করলেও এখনও কার্যক্রম শুরু হয়নি। এনআরবি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট রিলেশনশিপ ম্যানেজার আবদুন নুর গতকাল বলেন, চুয়াডাঙ্গা শাখা চালুর জন্য চলতি সপ্তাহে জনবল নিয়োগ করা হবে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা প্রশাসক ও বিআরটিএর সভাপতি সায়মা ইউনুস বলেন, এনআরবি ব্যাংকের পাশাপাশি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গা শাখাকেও টাকা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। তারা রাজিও হয়েছে। আশা করা যায়, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।