আলমডাঙ্গা ও জীবননগর উপজেলায় ওএমএসের চাল বিক্রি উদ্বোধন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: জেলার অন্যান্য উপজেলার মতো গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আলমডাঙ্গা ও জীবনগর উপজেলা শহর পর্যায়ে খোলা বাজারে ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। সকাল ৯টায় আলমডাঙ্গা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে চাল বিক্রি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান। উদ্বোধনকালে নির্বাহী অফিসার বলেন, চালের বাজারদর বেড়ে যাওয়ায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের দুর্দশা বিবেচনা করে সরকার খোলা বাজারে চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩০ টাকা কেজি দরে একজন সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি পর্যন্ত চাল কিনতে পারবেন। ওএমএসের চাল বিক্রি কর্মসূচিতে কোনো প্রকার অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় মানুষ আতপচাল খাওয়ায় অভ্যস্ত নয়। তাই সিদ্ধ চাল বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলা শহরের তিনটি পয়েন্টে শুক্রবার বাদে সপ্তাহে ছয়দিন প্রতিটি ডিলার এক মেট্রিক টন করে চাল বিক্রি করবেন। কর্মসূচি উদ্বোধনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংযুক্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবু তালেব, ওএমএস ডিলার সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, প্রতি মাসে ২৬ দিন করে এই কর্মসূচির চাল বিক্রি করা হবে। আলমডাঙ্গা পৌর শহরে মোট ৬ জন ওএমএস চাল বিক্রির ডিলার রয়েছেন। প্রতি সপ্তার বৃহস্পতি, শনি ও রোববার চাল বিক্রি করবেন এরশাদপুর চাতালমোড়ের ডিলার জনি, লালব্রিজ মোড়ে ডিলার জয়নাল আবেদীন, নতুন বাসস্ট্যান্ড মোড়ের ডিলার সিরাজুল ইসলাম। বাকী সোম, মঙ্গল ও বুধবার বিক্রি করবেন ডিলার ইন্দ্রজিৎ কুমার শর্মা হলুদপট্টিতে, হায়দার জামিল পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে ও ডিলার ফারজানা আক্তার সুমি স্টেশনরোডে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর পৌরসভায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে ওএমএস চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল এ চাল বিক্রি কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাজি হাফিজুর রহমান ও উপজেলা খাদ্র নিয়ন্ত্রক আব্দুল খালেক প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। ৩০ টাকা মূল্যে প্রতিকেজি চাল বিক্রি শুরু হলেও আতপ চাল হওয়ায় তাতে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের। ৩ জন ডিলারের ৩ হাজার কেজি চালের মধ্যে প্রথম দিনে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৪শ কেজি চাল। দরিদ্র ক্রেতাদের দাবি এ অঞ্চলের মানুষের আতপ চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস নেই। অবিলম্বে সিদ্ধ চাল সরবরাহ তাদের দুর্দশা লাঘব করা হোক।
পাইকারী ও খুচরা বাজারে হঠাত করে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ১১ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত। এতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ অবস্থায় সরকার সিদ্ধান্ত নেয় ৩০ টাকা কেজি মূল্যে খোলা বাজারে চাল বিক্রির। গতকাল হতে জীবননগর পৌরসভায় খোলা বাজারে চাল বিক্রি কার্যক্রম শুরু করা হয়। পৌরসভার ৬ জন ডিলারকে দু ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বৃহস্পতি, শনি ও রোববার ৩ জন ডিলার এবং সোম, মঙ্গল ও বুধবার অপর ৩ জন ডিলার পর্যায়ক্রমে খোলা বাজারে চাল বিক্রি করবেন। প্রতিজন ডিলার প্রতিদিন বরাদ্দ পাচ্ছেন ১ হাজার কেজি চাল। ৩০ টাকা কেজি দরের এ চাল একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে কিনতে পারবেন।
উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল কালীগঞ্জ সড়কে ওএমএস ডিলার আব্দুস সালাম ঈশা, চুয়াডাঙ্গা সড়কে শরিফুল ইসলাম ও চ্যাংখালী সড়কে ডিলার জাহিদুল ইসলাম চাল বিক্রি শুরু করেন। ডিলাররা জানান, চাল বিক্রি শুরু হলেও ঘরে অভাব থাকলেও আতপ চালের ক্রেতা হচ্ছে না। কারণ এ অঞ্চলের মানুষের আতপ চালের ভাত খাওয়ার অভ্যাস নেই। আতপ চাল বিক্রি না হওয়ায় ডিলাররাও এ চাল নিয়ে একপ্রকার বিপাকে পড়েছেন। ডিলারদের পক্ষ হতেও বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে। এদিকে ক্রেতাদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে অবিলম্বে খোলা বাজারে সিদ্ধ চাল সরবরাহের।