আন্দুলবাড়িয়া ইউপির নির্বাচনে ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ভোট পুনঃগণনার আদেশ

আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি: জীবননগর উপজেলার ২ নং আন্দুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ভোট পুনঃগণনার আদেশ দিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা নির্বাচনী আপিল ট্র্যইব্যুনাল বিচারক যুগ্ম জেলা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন। ভোট পুনঃগণনার জন্য আগামী ২৬ অক্টোবর নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণকে উপস্থিত থাকার জন্য আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, পঞ্চম দফায় ২০১৬ সালের ২৮ মে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনঃগনণার দাবিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মীর্জা হাকিবুর রহমান লিটন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর সহকারী জজ আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় বিজয়ী চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারসহ ২১৭ জনকে বিবাদী করা হয়। আদালত পিটিশনটি আমলে নিয়ে প্রাথমিক শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক এক আদেশে মুড়ি বই, ব্যালেট পেপার, রেজাল্ট সিট ও নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র আদালত হেফাজতে জমা নেন। এরই মাঝে বিজয়ী চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার আদালতে দায়ের করা এ মামলার বৈধতার প্রশ্ন তুলে গত ২৮ আগস্ট সুপ্রিমকোটের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে স্থাগিতাদেশ চেয়ে লিভ টু আপিল দায়ের করেন। হাইকোর্টের বিজ্ঞ বেঞ্চ শুনানি শেষে নি¤œ আদালতে বিচারাধীন মামলার ওপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। অভিযোগকারী পরাজিত প্রার্থী মির্জা হাকিবুর রহমান লিটন হাইকোর্টের দেয়া আদেশের বিরুদ্ধে বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিমকোটের আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করেন। বিজ্ঞ আপিল বিভাগের ততকালীন প্রধান বিচারপ্রতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ছায়েদ মাহামুদ, মির্জা হুছাইন হায়দার, ফজলুল হক ও হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী সমন্বয় বিজ্ঞ বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানি শেষে হাইকোটের দেয়া রায় খারিজ করে দেন। ফলে চুয়াডাঙ্গা সদর সিনিয়ার সহকারী জজ আদালত (নির্বাচন ট্রাইবুনাল) দায়ের করা মামলার বিচারকার্যে বিচারক উভয়পক্ষের দীর্ঘ শুনানি শেষে খারিজ করে দেন। আদালতের এ আদেশ চ্যালেঞ্জ করে অভিযোগকারী বাদী মির্জা হাকিবুর রহমান লিটন চুয়াডাঙ্গা নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনাল যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। বিজ্ঞ বিচারক দীর্ঘ শুনানি শেষে আগামী ২৬ অক্টোবর ভোট পুনঃগণনার আদেশ দেন। আদালতের ধার্যদিনে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, চুয়াডাঙ্গা কোর্ট ইন্সপেক্টর, আপিলকারীর পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহ আলম ও রেসপনডেন্টের পক্ষে মাহতাব আলীকে আদেশের অনুলিপি সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট আদালতের এক আদেশের কপিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, আন্দুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার ৪ হাজার ৭৬৯ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মীর্জা হাকিবুর রহমান লিটন ৪ হাজার ৬৮১ ভোট পেয়ে মাত্র ৮৮ ভোটে পরাজিত হন।