রেফার করা জরুরি রোগী নিয়ে ঢাকা নিয়ে যেতে অপারগতা প্রকাশের পর মোবাইলে বাগবিতণ্ডা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক স্বপনকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। জরুরি রোগীবহনে গড়িমশির ছলচাতুরির এক পর্যায়ে গতরাত ১১টার দিকে হাসপাতাল চত্বরে তাড়িয়ে ধরে তাকে মারপিট করা হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাকে নেয়া হলে স্বামীর পাশে ছুটে আসা তার স্ত্রীর উচ্চবাচ্যে হামলাকারীরা আবারো রুখে যায়।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালক হিসেবে বেশ কিছুদিন ধরে স্বপন কর্মরত। হাসপাতাল কোয়ার্টারেই বসবাস করেন তিনি। চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম আসমানের মা গুরুতর অসুস্থ। মাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সচালক স্বপনের সাথে যোগাযোগ করেন আসমানসহ কয়েকজন। স্বপন ঢাকায় যেতে অপারগতা প্রকাশ করে অন্য গাড়ি ঠিক করে দেয়ার কথা জানায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রোগীবহনের জন্য টাকাও গ্রহণ করে। টাকা নেয়ার পরও ওই রোগী না নিয়ে অন্য রোগী নিয়ে ঢাকায় যেতে হবে বলে জানায় স্বপন। এরই এক পর্যায়ে রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের সামনে অবস্থানকালে স্বপনের ওপর একদল যুবক হামলা চালায়। স্বপন ময়নাতদন্ত ঘর তথা টিবি হাসপাতালের দিকে দৌঁড়ে পালায়। তাতেও রক্ষা হয়নি। তাকে তাড়িয়ে ধরে এলোপাতাড়ি মারপিট করা হয়। খবর পেয়ে শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবুল খায়ের দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পুলিশের সহযোগিতায় স্থানীয়রা স্বপনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন। খবর পেয়ে স্বপনের স্ত্রী সেখানে ছুটে আসেন। চড়া কণ্ঠে কথা বলতে থাকেন। হামলাকারীরা পুনরায় রুখে যায়। পক্ষান্তরে হামলাকারীদের কয়েকজন বলেছেন, স্বপন রোগী ও রোগীর লোকজনের সাথে যাচ্ছে তাই ব্যবহার করে। যে রোগী নিয়ে গেলে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিতে পারে সেই রোগী ছাড়া অন্য রোগী অ্যাম্বুলেন্সে তোলে না। নানা অজুহাত খাড়া করে। হয় বলে শরীর খারাপ, না হয় বলে গাড়ি খারাপ। এ সব বলে অন্যগাড়ি ঠিক করে দিয়ে কমিশন খায়। এছাড়া হাসপাতালের দেয়ালে স্বপন অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া লিখে রেখে তা আদায় করে থাকে। এরপর ঢাকায় রেফার করা জরুরি রোগী সে অ্যাম্বুলেন্সে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে জনগণ মারপিট করেছে। এদিকে স্বপন পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গেলে ওরা আজে বাজে জিনিস তোলে। এ কারণেই নিজে যেতে না চেয়ে আমি অন্য অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দিতে চেয়েছিলাম। এতেই ওরা আমাকে মারপিট করলো।
উল্লেখ্য, এর আগে শিক্ষানবিস এক নার্সকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চরম উত্তেজনা দানা বাধে। আন্দোলনের মুখে স্বপনকে হারদী বদলি করা হয়। পরে তিনি আবারও ফেরেন সদর হাসপাতালে।