হাত-পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে নগদ টাকা ও মালামাল লুট

আলমডাঙ্গা কৃষ্ণপুরের গরুব্যবসায়ী বাড়িতে সশস্ত্র ডাকাতদের তাণ্ড

 

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার কৃষ্ণপুর গ্রামের বিশিষ্ট গরুব্যবসায়ী মিনার বাড়িতে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতরা বাড়ির দরজা ভেঙে সবাইকে জিম্মি করে নগদ সাড়ে ৪ লাখ টাকাসহ প্রায় ৯ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে গেছে। এ এলাকায় একের পর এক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের নীরব ভূমিকার কারণে তা বন্ধ হচ্ছে না। গ্রামে ডাকাতি আতঙ্ক বিরাজ করছে।

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলাধীন জেহালা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের ক্লাবপাড়ার মৃত বারেক আলীর ছোট ছেলে মিনারুল ইসলাম মিনা এলাকার বিশিষ্ট গরুব্যবসায়ী। তিনি ওই গ্রামের জামে মসজিদ কমিটির সভাপতিও। গত রোববার রাতে বাড়ির অন্য সদস্যদের সাথে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সোয়া ১টার দিকে ৮/১০ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত বাড়ির পাঁচিল টপকে ভেতরে ঢোকে। এরপর তারা গেটের তালা ভাঙে। পরে ঘরের গ্রিলের তালা ভেঙে ঘরে ঢোকে। পরে ঘরের দরজা ভাঙলে মিনা ব্যাপারী টের পেয়ে যান। সাথে সাথে বাড়ির অন্য সদস্যরাও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠে পড়ে। এ সময় মুখোশধারী ডাকাতরা বড় বড় রামদা ধরে বাড়ির সদস্যদের ঘাড়ে। আর মিনা ব্যাপারীর হাত-পা বেঁধে খাটের ওপর কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। ডাকাতরা ঘরের আসবাবপত্র ও শোকেচ-আলমারি ভেঙে তছনছ করে। মিনার মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী রোকেয়া খাতুন চিৎকার দিয়ে উঠলে এক ডাকাত সদস্য তার গলা চেপে ধরে। সে মিনাকে টাকা-পয়সা, সোনা দানা যা আছে বের করে দিতে বলে। না হলে তার মেয়ে রোকেয়াকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। টাকা ও সোনার গয়নাগাটি বের করে দিতে না চাইলে রোকেয়ার গলা চেপে ধরে হত্যা করতে যায়। এ সময় রোকেয়ার অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে। সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে নগদ সাড়ে ৪ লাখ টাকা, গয়নাগাটি, মোবাইলফোনসহ আরো সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালামাল বের করে ডাকাতদের দিয়ে দেন মিনার স্ত্রী। প্রায় আধাঘণ্টা ধরে লঙ্কাকাণ্ড চালানোর পর বাইরে থেকে সিটকিনি আটকে দিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পরে মিনার পরিবারের চিৎকার চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা এসে মিনা ব্যাপারী ও তার পরিবারের লোকজনকে উদ্ধার করে। তারা সাংবাদিকদের কাছে তথ্য দিতেও ভয় পান। রাতেই খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ক্যাম্প ইনচার্জ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে দুঃসাহসিক এ ডাকাতির পর গ্রামেজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

সূত্র জানায়, বছরখানেক আগে দুর্বৃত্তরা চাঁদার দাবিতে মিনা ব্যাপারীর বাড়িতে বোমা ফেলে রেখে গিয়েছিলো।

এলাকায় একের পর এক ডাকাতি ও সন্ত্রাসের ঘটনায় কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় এ ধরনের ঘটনা কমছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। গত ২৭ অক্টোবর সোমবার রাতে একই ইউনিয়নের বড়পুটিমারী গ্রামের মুসারদ্দির বাড়িতে হানা দেয় একদল ডাকাত। ডাকাতরা বাড়ির ভেতরে বোমা ছুড়ে মারলে বৃদ্ধ মুসারদ্দি নিহত হয়। সে ঘটনায়ও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। এ কারণে ডাকাতরা দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।