স্বামীর বিরুদ্ধে কিশোরী নববধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ

 

আলমডাঙ্গায় স্ত্রী-সন্তান রেখে মোবাইলফোনে পরকীয়া করে স্কুলছাত্রীকে বিয়ে

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১৩ বছরের কিশোরী আরজিনাকে বিয়ে করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলো এক সন্তানের জনক রাজু। স্বামী রাজু ভোগাইল বগাদীর এক শিশুহত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি। গতকাল দুপুরে রাজু তার এক বন্ধুর সহযোগিতায় আরজিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাতেই পুলিশ আরিজনার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়। আজ বুধবার লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গার নগরবোয়ালিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের নাতিছেলে রাজু এক কন্যা সন্তান ও স্ত্রী রেখে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সালদা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ১৩ বছরের মেয়ে আরজিনার সাথে মোবাইলে প্রেমসম্পর্ক গড়ে তোলে। রাজুকে ভালোবেসে দেড় মাস আগে আরজিনা গোপনে বাড়ি থেকে চলে এসে রাজুকে বিয়ে করে। রাজু কিশোরী বধূকে নিয়ে নগরবোয়ালিয়ার মেহেরুল্লাহ শাহ’র ভাড়াবাড়িতে ওঠে। কিন্তু নববধূকে ঘরে তুলেই নানা ফন্দি আঁটতে থাকে। রাজুর ১ম স্ত্রী তাদের ২য় বিয়ে মেনে নিচ্ছে না- এ অজুহাত তুলে সে আরজিনার কাছে ৮০ হাজার টাকা দাবি। সে বলে ৮০ হাজার টাকা পেলে ১ম স্ত্রীকে দিয়ে ওর বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু আরজিনা রাজুর দাবিকৃত টাকা সংগ্রহ করতে পারেনি।

আরজিনার বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, দুই/তিন দিন আগে আরজিনা তাকে মোবাইলে ৮০ হাজার টাকার কথা জানিয়ে বলেছিলো, টাকা না পেলে রাজু তার অনেক ক্ষতি করে দেবে। গতকাল রাজুর বড় ১ম স্ত্রী কন্যা-সন্তান নিয়ে ওই ভাড়া বাড়িতে এসে ওঠার কথা ছিলো। এদিকে দাবিকৃত টাকা না পেয়ে রাজু তার মুচিপাড়ার এক বন্ধুকে ডেকে আনে বাড়িতে। তখন দুপুর ২টা। আরজিনাকে নিয়ে ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেয় রাজু। আধাঘণ্টা পর রাজু ও তার বন্ধু ঘরের দরজা খুলে আরজিনাকে বাইরে নিয়ে এসে মাথায় পানি দিতে থাকে। তখনও আরজিনা বেঁচে ছিলো। এরপর তারা আরজিনাকে হারদী স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে এনে ফেলে রেখে দ্রুত পালিয়ে যায়।

চিকিৎসক জানান, দুটি ছেলে অল্প বয়সী মেয়েটিকে এনেই রেখে দ্রুত চলে যায়। পরে পুলিশে খবর দেয়া হয়। থানার এসআই আফজাল ঘটনাস্থলে পৌছে মৃত আরজিনার লাশ থানায় নিয়ে নেন। এদিকে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১২ সালে উপজেলার ভোগাইলবগাদী গ্রামের প্রয়াত চাঁন্দু মেম্বারের স্কুলপড়ুয়া ছেলে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। বাপকে না পেয়ে খুনিরা স্কুলপড়ুয়া সন্তানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ওই হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি রাজু। এই রিপোর্ট লেখাবধি আরজিনার বাবা আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন।