মাদরাসা শিক্ষকের বেত্রাঘাতে শিশুছাত্র আহত

দু ছাত্রের মারামারির জের ধরে চুয়াডাঙ্গা জাফরপুরে তুলকালাম কাণ্ড

 

মসজিদের মাইকে দু যুবকের ভুল তথ্য প্রচারে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন

 

স্টাফ রিপোর্টার: মাদরাসার দু শিশুছাত্রের মধ্যে মারামারির জের ধরে চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। শিশুছাত্র জান্নাত ওমর ফারুককে (১০) মাদরাসা শিক্ষক আহসান হাবীব বেত্রাঘাতে আহত করলে থানায় নালিশ করা হয়। গ্রামে পুলিশ নেয়ায় কয়েকজনের অপপ্রচারে ক্ষুব্ধ জনতা শিশুছাত্র ফারুকের দু চাচার দুটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের একটি আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে, অপরটি ভাঙচুর করা হয়েছে।

DSC04696

গতকাল রোববার বিকেলে শিশুছাত্রকে বেত্রাঘাত করা হয়। সন্ধ্যার পর পুলিশ যায়। রাতে মসজিদের মাইক প্রচারে গ্রামের সাধারণ মানুষকে সংগঠিত করে দু যুবক। তাদের প্ররোচনায় ক্ষুব্ধ জনতা রাত ১০টার দিকে শিশুছাত্র ফারুকের চাচা স্থানীয় যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম নজুর জ্বালানি কাঠের দোকানসহ কাঠের অফিসে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেয়। অপর চাচা সিদ্দিকের খবারের হোটেল ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয়রা বলেছে, চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর মোল্লাপাড়ার ইদ্রিস আলীর ছেলে জান্নাত ওমর ফারুক (১২) গ্রামেরই হাফেজিয়া মাদরাসায় পড়ে। তার ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী জগলুও (৮) একই মাদরাসার ছাত্র। অপর ছাত্র মুন্নার সাথে জগলুর মারামারি হয়। মুন্না বয়সে বড় হলেও শিশু জগলুর সাথে মারামারি করলে জান্নাত ওমর ফারুক প্রতিবাদ করে। মুন্নার সাথে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটে বিকেল ৫টার দিকে। এ সময় মাদরাসা শিক্ষক খাদিমপুরের আহসান হাবীব লাঠি দিয়ে শিশুছাত্র জান্নাত ওমর ফারুককে বেদম প্রহার করেন। লাঠির আঘাতে পিঠ ও উরু দেগে যায়। সে বাড়ি ফিরে ঘটনা জানায়। তার চাচা নজরুল ইসলাম নজু তাকে প্রথমে সদর হাসপাতালে নেন। পরে থানায় নালিশ করেন। নালিশ পেয়ে জাফরপুরে দ্রুত পৌছায় পুলিশ। সাথে নজরুল ইসলাম নজুও ছিলেন। মাদরাসা শিক্ষক আহসান হাবীবকে না পেয়ে গালিগালাজ করে পুলিশের সাথেই নজরুল থানায় ফেরেন। এরপরই গ্রামের দু যুবক মসজিদের মাইকে প্রচার করে, মাদরাসা শিক্ষক আহসান হাবীবকে নজরুলসহ তার লোকজন তুলে নিয়ে মারধর করছে। এ খবরে গ্রামের সাধারণ মানুষ সংগঠিত হয়। জাফরপুর মোড়ে অবস্থান নেয়। ক্ষুব্ধ জনতা নজরুল ইসলাম নজুর কাঠের আড়তসহ কাঠের তৈরি দোতলা ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছুনোর পূর্বেই আগুনে ভস্মীভূত হয়। ক্ষুব্ধ জনতা নজরুলের অপর ভাই সিদ্দিকের হোটেলও ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শিশুছাত্রকে বেত্রাঘাতে আহত করা মাদরাসা শিক্ষক আহসান হাবীবকে ধরতে পারেনি পুলিশ। নজরুল গ্রামে ফিরতে পারেননি। স্থানীয়দের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেছেন, রাসেল ও রিংকু মসজিদের মাইকে প্রচার করার কারণেই গ্রামের সাধারণ মানুষ ক্ষোভের আগুনে জ্বলতে থাকে।