পৃথক সময়ে প্রতিপক্ষের হাতুড়িপেটা ও ধারালো অস্ত্রের কোপে মৃত্যুশয্যায় দু যুবক

চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড় টেকনিকেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে দফায় দফায় মহড়া

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পৃথক সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তিন সহোদরসহ ৫ জনকে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে এস মল্লিক ওরফে সনি মল্লিক (২৮) ও ডায়মন্ডকে (৩০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ডায়মন্ডের শারীরিক অবস্থা ছিলো আশঙ্কাজনক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ মোতায়েন ছিলো।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়া বনাম ফায়ার স্টেশন সংলগ্ন সরদারপাড়ার মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্যোগ নেয়া হয়। গত শুক্রবার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে খেলতে গেলে পূর্ব থেকে সেখানে খেলায় মেতে থাকা দক্ষিণপাড়ার ফজলুর রহমানের ছেলে ডায়মন্ডের সাথে সরদারপাড়ার যুবকদলের বিরোধ দেখা দেয়। খেলার সুযোগ না পেয়ে সরদারপাড়ার যুবকদল ফিরে যায়। শুক্রবারের ভেস্তে যাওয়া প্রীতিম্যাচ শনিবার বিকেলে একই মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবারের বিরোধ জিইয়ে থাকে। ডায়মন্ডসহ তার সহযোগীরা গতকাল সকাল থেকে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় মহড়া দেয়। সরদারপাড়ার ডাবলু, ইমরান, রাজীব, রাকিবসহ তাদের সহযোগীদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। ডাবলু, ইমরানরা এলাকায় ফেরে। দুপুর ১টার দিকে ডায়মন্ডদের খেলার পৃষ্ঠপোষক দক্ষিণপাড়ার ভাগ্নে মসজিদপাড়ার প্রবাস ফেরত এস মল্লিক ওরফে সনি মল্লিক মোটরসাইকেল নিয়ে একাই এলাকায় যান। তাকে একা পেয়ে প্রতিপক্ষ যুবকদল হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করে। মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। এস মল্লিক মসজিদপাড়ার খোকন মল্লিকের ছেলে। তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। সনি মল্লিককে হাতুড়িপেটা করার খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা মসজিদপাড়ার ১০/১৫ জন যুবক টেকনিক্যাল স্কল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় মহড়া দেয়। অপরদিকে সরদারপাড়ার যুবকদল রুখে দাঁড়ায়। চুয়াডাঙ্গা মসজিদপাড়ার যুবদল দ্রুত সরে পড়লেও সামনে পড়ে ডায়মন্ড, তার দু ভাই মুন্না, মুক্তার ও তাদের দৌলাতদিয়াড় দক্ষিণপাড়ার জুবায়ের। এদের ধারালো অস্ত্র কুপিয়ে জখম করে। ধারালো অস্ত্রের কোপে ডায়মন্ডের সারা শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়। তাকেও উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। মুন্না, মুক্তার ও জুবায়ের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থানা হয়ে বাড়ি ফেরে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।

সনি মল্লিকের ভাই শান্তি বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় দৌলাতদিয়াড় ফায়ার স্টেশন সংলগ্ন সরদারপাড়ার খাদেম আলীর ছেলে ডাবলু, মৃত ইকতার মিস্ত্রির ছেলে ইমরান, আবুল কাশেমের ছেলে রাজীব ও একই পাড়ার ফড়িং দর্জির ছেলে রকিবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে। অপর মামলার বাদী হয়েছেন ডায়মন্ডের ভাই মুন্না। তিনিও অভিন্ন আসামিদের নাম উল্লেখ করে দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাত বেশ কয়েকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।