বাংলাদেশি নাগরিক বকুলকে পিটিয়ে হত্যা ॥ বিজিবির কড়া প্রতিবাদ

দামুড়হুদার চাকুলিয়া সীমান্তে বিএসএফ’র বর্বরতা

দর্শনা অফিস/কুড়–লগাছি প্রতিনিধি: দামুড়হুদার চাকুলিয়া সীমান্তে বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছে বাংলাদেশি নাগরিক বকুলকে। হত্যা শেষে বকুলের লাশ বাংলাদেশে ফেলে গেছে বিএসএফরা। হত্যার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজিবি। লে. কর্নেল আমির মজিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বকুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেয়া হয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দামুড়হুদা উপজেলার কুড়–লগাছি ইউনিয়নের চাকুলিয়া স্কুলপাড়ার সদার উদ্দিন ম-লের ছেলে ২ সন্তানের জনক বকুল ম-ল গতপরশু শুক্রবার সন্ধ্যারাতে বকুল বাড়ি থেকে বের হয়। রাত দুটো পর্যন্ত গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে শুয়ে ছিলো বকুল ও আফসারসহ ৪-৫ জন গরু ব্যবসায়ী। রাত দুটোর দিকে ৮৭/৮৮ মেন পিলারের মাঝামাঝি সীমান্ত পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করে। এ সময় ভারতের মালোয়াপাড়া টহল বিএসএফ সদস্যদের হাতে বকুল আটক হলেও বাকিরা পালিয়ে যায়। বকুলের সঙ্গীদের মধ্যে গরু ব্যবসায়ী আফসার আলীর কাছ থেকে শোনা গেছে, বিএসএফরা বকুলকে ধরে রাইফেলের বাট দিয়ে অমানুষিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে বেয়নেটের আঘাতে বকুলকে ক্ষত-বিক্ষত করে। হাত ও পায়ের শিরা কেটে বকুলকে মৃত্যু ভেবে মুমূর্ষু অবস্থায় বাংলাদেশ সীমানায় ফেলে যায়। ভোরে স্থানীয় লোকজন বকুলকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। সকাল ১০টার দিকে বকুলের লাশ বাড়িতে আনা হলে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। খবর পেয়ে গতকাল শনিবার বিকেল ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-৬ বর্ডার গার্ডের পরিচালক লে. কর্নেল আমির মজিদ নিহত বকুলের বাড়িতে যান। বকুলের পরিবারকে সান্ত¦না দেন এবং সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ না করার জন্য পরামর্শ দেন। বকুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়া হয়েছে। আজ রোববার ময়নাতদন্ত শেষে দাফন সম্পন্ন করা হতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ও পতাকা বৈঠকের আহ্বান করে দামুড়হুদা বড়বলদিয়া বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার গতকালই মালোয়াপাড়া বিএসএফ বরাবর পত্র দিয়েছে। পত্রের কোনো সাড়া না পেলেও আজ রোববার সকালে ঠাকুরপুর সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ’র কোম্পানি কমান্ডর পর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে। অভিযোগ উঠেছে, ফুলবাড়ি, ঠাকুরপুর চাকুলিয়াসহ সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো মানুষকে অবৈধপথে ভারতে প্রবেশের ক্ষেত্রে সার্বিক সহায়তা করে থাকে কথিত দালালচক্র।