বঙ্গোপসাগরের আকাশে নিরাপত্তায় নামছে মার্কিন সমুদ্র উড়োজাহাজ

 

স্টাফ রিপোর্টার: যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর অত্যাধুনিক ও নতুন সমুদ্র উড়োজাহাজ সহসাই বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় টহল দেবে। বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের সমুদ্র এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী যৌথভাবে সমুদ্র টহল শুরু করবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌ ঘাঁটিতে মার্কিন নৌ বাহিনীর সপ্তম নৌ বহরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ৭৩ টাস্কফোর্সের কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল চার্লস উইলিয়ামস এ ঘোষণা দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অনুশীলন কর্মসূচি- ক্যারাট এর আওতায় দুই দেশের নৌবাহিনীর চতুর্থ অনুশীলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এডমিরাল চালর্স বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর ডুবুরী ও বিস্ফোরক অর্ডিন্যান্স ডিম্পোজাল বিশেষজ্ঞরা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের সহায়তা দিবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে তীরবর্তী অভ্যন্তরীণ নৌপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। প্রথমবারের মতো সমুদ্র সীমার পরিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর পি-৮ সমুদ্র উড়োজাহাজ টহল দেবে।

ক্যারাট কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ পর্যায়ের ছয় দিনের যৌথ অনুশীলন কার্যক্রম ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। সমুদ্র তীরে ও সমুদ্র এলাকায় অনুশীলন সূচি সাজানো হয়েছে যৌথ সমুদ্রে সীমার নিরাপত্তা অগ্রাধিকার, সমুদ্র সম্পদ আহরণ ও দক্ষতা উন্নয়নকে বিবেচনা করে। ক্যারাট কর্মসূচি ইতোমধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ৯টি দেশ বাংলাদেশ, ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও পূর্ব তিমুরে পরিচালিত হয়েছে। বাংলাদেশ ৪র্থ ক্যারাট অনুশীলনের সূচনা পর্বে গতকাল ঈশা খাঁ নৌ ঘাঁটিতে আরো বক্তব্য রাখেন নৌবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া প্রধান রিয়ার এডমিরাল আখতার হাবিব, ফ্লোটিলা ইউনিট প্রধান কমোডর খালেদ ইকবাল প্রমুখ।

মার্কিন রিয়ার এডমিরাল চার্লস উইলিয়ামস বলেন, মার্কিন সমুদ্র টহল উড়োজাহাজের সাথে থাকবে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সদ্য যোগ হওয়া ডর্নিয়ার ২২৮ সমুদ্র সীমা টহল উড়োজাহাজ। তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্র সীমার ওপরেও উড়বে। গতকালই দুপুরে চট্টগ্রাম নৌ ঘাঁটিতে এসে পৌঁছেছে মার্কিন আরেব, যুদ্ধ জাহাজ ইউএসএনএস সেফগার্ড। ক্যারাট অনুশীলনে সেফগার্ড ছাড়াও বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর বিএনএস বঙ্গবন্ধু, বিএনএস সমুদ্র জয় ও এডব্লু -১০৯ টহল ও অনুশীলনে অংশ নেবে। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের দেয়া বিএনএস সমুদ্র জয় গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের নৌ বহরে যোগ হয়। সমুদ্র জয় গত নয় মাসে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এলাকায় টহল দিয়েছে। প্রতিমাসে কয়েকবার করে সমুদ্র জয় ওই এলাকায় নিরাপত্তা টহল দেয়।

মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির পর বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের সক্ষমতা বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনী নানাভাবে সহায়তা দিচ্ছে। যার উদ্দেশ্য হলো পাইরেসি, দস্যুতাসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রম থেকে সমুদ্র পথকে নিরাপদ রাখা। নিরবিচ্ছিন্নভাবে সমুদ্র পতের বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু রাখাই এর উদ্দেশ্য। এর ওপর সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণ, আহরণে বাংলাদেশকে সক্ষম করে তোলা। মার্কিন নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার স্কোয়াড্রন সেভেন কমান্ডার ক্যাপ্টেন ফ্রেড কেসার বলেন, আমরা এ বছর বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে সমুদ্রে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি এবং তাদের জাহাজ ও উড়োজাহাজের সাথে বঙ্গোপসাগরে অনুশীলনে অংশ নিতে চাই।