পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির বাসনায় পবিত্র হজ পালন

মাথাভাঙ্গা মনিটর: পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় পবিত্র মক্কা নগরীর অদূরে উকুফে আরাফা বা আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের মধ্যদিয়ে গতকাল বুধবার পবিত্র হজ পালন করেছেন গোটা দুনিয়া থেকে আগত লাখো লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আরাফাতের পাহাড় ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত হতে থাকে আবেগাপ্লুত বেশুমার  কণ্ঠের লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা-শারিকালাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নে’মাতা লাকা ওয়াল মুলক লা শারিকা লাক’-তালবিয়ায়।

জাবালে রাহমত শাদা আর শাদায় একাকার। আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময়তায় অধিকার করে রাখে। এক অপার্থিব আবহ রচিত হয় পুরো ময়দানে। সবার পরনে শাদা দুই খণ্ড বস্ত্র। সবারই দীন-হীন বেশ। নেই আশরাফ-আতরাফ বিভেদের অচলায়তন। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমতপ্রাপ্তি ও নিজের গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহতায়ালার মহান দরবারে অশ্রুসিক্ত ফরিয়াদ জানান সমবেত মুসলমানেরা। একে অপরের সাথে পরিচিত হন, কুশল বিনিময় করেন। বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্যেরও অবতারণা হয় বিশ্ব মুসলমানের মহাসম্মিলনের দিনে।

গতকাল দুপুরে মসজিদে নামিরাহ থেকে খুতবা প্রদান করেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আব্দুল আজিজ আল শাইখ (৭৪)। স্থানীয় সময় দুপুর ১২টার কিছু পরে শুরু হয়ে খুতবা শেষ হয় ১২টা ৪৪ মিনিটে। হজের খুতবা শুনে ইমামের পেছনে পরপর জোহর ও আসরের নামাজ জোহরের ওয়াক্তে আদায়ের পর সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করেন হাজিরা। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের সময় ব্যবধান তিন ঘণ্টা। সূর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হন হাজিরা। মূলত ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়।

৩৫ বছর ধরে হজের খুতবা প্রদানকারী ১৭ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারানো এই গ্র্যান্ড মুফতি সমগ্র মুসলিম জগতকে শিষাঢালা পাঁচিলের মতো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়ে বলেন, মুসলমানরা যদি ঐক্যবদ্ধ হয়, তাহলে ইসলামই হবে পৃথিবীর মধ্যে সবচাইতে বিজয়ী এবং শক্তিশালী আদর্শ। কিন্তু দুঃখজনক হলো আমরা মুসলমানরা আজ ঐক্যবদ্ধ নই। কেউ আমরা আমল নিয়ে, কেউ আকিদা নিয়ে বিভক্ত। আমাদের সকলের উচিত আজ শিষাঢালা পাঁচিলের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া।