দামুড়হুদায় পাখিভ্যানের চাকায় ভোমর মারাকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ : লাঠি পেটা

 

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদায় অবৈধযান পাখিভ্যানের চাকায় ভোমর মারাকে কেন্দ্র করে রিকশা-ভ্যান শ্রমিকরা সড়ক অবরোধসহ ইউএনও’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা সদরের চৌরাস্তার মোড়ে দামুড়হুদা রিকশা-ভ্যান ইউনিয়নের সভাপতি নূরনবীর নেতৃত্বে ওই সড়ক অবরোধ হয়। এ সময় সড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দামুড়হুদা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে পাখিভ্যান চালকসহ কমপক্ষে ১০ জন উৎসুক জনতা আহত হন। মুহূর্তের মধ্যে সড়ক ফাঁকা হয়ে যায়। পুলিশ শ্রমিক নেতা নুরনবীকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে ছেড়েও দেয় পুলিশ।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধযান পাখিভ্যান, আলমসাধু, নসিমন, করিমন যানজট সৃষ্টি করে আসছে। ফলে মাঝে মধ্যেই ঘটে সড়ক দুর্ঘটনা। ভূক্তভোগি পথচারীরা বিষয়টি দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করে এবং যানজট নিরসনের অনুরোধ জানায়। দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যত্রতত্র অবৈধযান পাখিভ্যান, আলমসাধু, নসিমন, করিমন রেখে যানজট সৃষ্টির অপরাধে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান কয়েক দফায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করার মাধ্যমে তাদেরকে সতর্ক করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বেশকিছু পাখিভ্যান যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যানজটের সৃষ্টি করলে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই সমস্ত পাখিভ্যানের চাকায় ভোমর মারেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দামুড়হুদা রিকশা-ভ্যান ইউনিয়নের সভাপতি নূরনবীর নেতৃত্বে বেশকিছু পাখিভ্যান চালক গতকাল বিকেলে ইউএনও’র অফিসে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পরে চৌরাস্তার মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানজটের সৃষ্টি করলে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানায়। পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে মিছিলসহ থানা অভিমুখে যাওয়ার ঘোষণা দিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পুলিশের লাঠির আঘাতে পাখিভ্যান চালক দেউলীর বাদশা, স্থানীয় যুবক আরিফুল, ফয়সালসহ কমপক্ষে ১০ জন উৎসুক জনতা আহত হন। মুহূর্তের মধ্যে সড়ক ফাঁকা হয়ে যায়। এ সময় পুলিশের পিকআপভ্যানের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। তবে কীভাবে ভেঙে গেছে তা পরিষ্কারভাবে জানা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশ শ্রমিক নেতা নুরনবীকে থানায় ধরেও নিয়ে যায়। পরে নুরনবীর ভাই যুবলীগ নেতা ইউসুফ থানা থেকে তাকে ছাড়িয়ে নেন।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ জানান, অবৈথভাবে সড়ক অবরোধ করায় জানমালের নিরাপত্তাসহ পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনতেই বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করা হয়েছে। এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান জানান, বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওই সমস্ত অবৈধযান এমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকে যেকোনো গাড়ি বের হতে পারে না। যানজট নিরসনের বিষয়টি এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। গতকাল আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায়ও এ নিয়ে আলোচনা হয় এবং যেকোনো মূল্যে বাসস্ট্যান্ড এলাকা যানজটমুক্ত করার জোর দাবি ওঠে। নুরুননবীও ওই সভায় ছিলেন। তার সামনেই আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সড়ক থেকে অবৈধযান অপসারণের সরকারি নির্দেশনাতো রয়েছেই। আমার কাছে তথ্য আছে অনেক ভ্যানচালকই সড়ক অবরোধে যেতে রাজি ছিলেন না। তারা যেতে না চাইলে তাদের গাড়ির চাবি জোর করে কেড়ে নেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা নুরুনবীর কাছে জানতে চাইলে তিনি মোবাইলফোনে মাথাভাঙ্গাকে জানান, আজকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় ভ্যানচালকদের সাথে বৈঠক করার পর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে ইউএনও’কে অপসারণের দাবিতে কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।