বিদ্যুতস্পৃষ্টে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি লিটনের মৃত্যু
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় বিদ্যুতস্পৃষ্টে লিটন (৩২) নামের এক ইলেকট্রিক মিস্ত্রির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আশরাফুল নামের এক টিউবওয়েল মিস্ত্রিও বিদ্যুতস্পৃষ্টে আহত হয়েছেন। লিটন দামুড়হুদা মাদরাসাপাড়ার মৃত হোদু ম্যাকানিকের ছেলে এবং দামুড়হুদা বাজারে লিটন ইলেকট্রনিক্সের মালিক। গতকাল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা সদরের মাদরাসাপাড়ায় নিজ বাড়িতে টিউবওয়েলের সাথে মোটরপাম্প লাগাতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী আহত টিউবওয়েল মিস্ত্রি আশরাফুল জানান, গতকাল শুক্রবার সকালে টিউবওয়েল মিস্ত্রি হারুন ও আমিসহ মোট ৪ জন দামুড়হুদার মাদরাসাপাড়ার মৃত হোদু ম্যাকানিকের ছেলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি লিটনের বাড়িতে যায় টিউবওয়েল পুঁততে। টিউবওয়েল পুঁতা শেষ হলে লিটন বলেন, তোরা একটু দাঁড়া মোটরপাম্পটি জুড়ে নিই। এ সময় টিউবওয়েল মিস্ত্রি হারুন বলেন, আমরা তো মোটরের কাজ জানি না। লিটন বলেন, তোরা শুধু টিউবওয়েলের সাথে প্যাচ এটে দিবি আমি মোটরের কাজ জানি। এই বলে লিটন ঘর থেকে মোটরপাম্প বের করে আনেন এবং টিউবওয়েলের সাথে সেট করেন। মোটরপাম্প দিয়ে পানি তোলার জন্য লিটন মোটরের নল চেপে ধরে এবং তার ছেলে মাহফুজকে মোটরের সুইচ দিতে বলে। ঘরের বারান্দা থেকে ছেলে মাহফুজ মোটরের সুইচ দেয়ার সাথে সাথে মোটরটি বডি হয়ে যায় এবং লিটনকে আচড়ে ফেলে দেয়। ওই সময় লিটন মোটরপাম্পের ওপর আচড়ে পড়ে জ্ঞান হারান। আমি লিঠনকে ওঠাতে গিয়ে তার গায়ে হাত ঠেকার সাথে সাথে আমাকেও আচড়ে ফেলে দেয়। ওই সময় হারুন লিটনের ছেলেকে বলেন, তাড়াতাড়ি সুইচ অফ করো। মোটরের সুইচ অফ করার পর লিটনকে উদ্ধার করে করিমনযোগে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। বিকেল ৩টার দিকে লিটনের মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিলে পরিবারে নেমে আসে শোকের মাতম।
এদিকে নিহত লিটনের স্ত্রী এক সন্তানের জননী (৭ মাসের গর্ভবতী) মাহফুজা খাতুন, একমাত্র ছেলে মাহফুজ (৯) এবং স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। স্বামীর মৃত্যুর শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন স্ত্রী মাহফুজা। বাদ মাগরিব দামুড়হুদা ডিএস দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে জানাজার নামাজ শেষে ব্র্যাকমোড়স্থ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। এক সন্তানের জনক লিটন ছিলেন ৩ ভাই ও এক বোনের মধ্যে মেজো। একমাত্র বোন লাবনীর বিয়ে হয়েছে খাঁপাড়ায়। লিটন দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডের কৃষক এলাহি বক্সের জামাই। ছোট বেলায় লিটন তার মা-বাবা দুজনকেই হারান।