জালনোট শনাক্তে পশুহাটে মেশিন

ঈদ হা উপলক্ষে সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঈদের আগে বিশেষ করে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদের আগে পশুহাটে জালটাকা কারবারীরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। পশুহাটে যাতে জালনোট ঢুকতে না পারে সেজন্য প্রতিবছরের মতো এবারো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বছর রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন পশুরহাটে নতুন পুরোনো মিলে প্রায় এক হাজার জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন বসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কাজের জন্য সক্রিয় থাকবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার বাইরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাহিদা অনুযায়ী পশুরহাটগুলোর জন্য নতুন করে ২৭৮টি জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন দেয়া হচ্ছে। তাছাড়া গত বছরের কোরবানি ঈদ পর্যন্ত রাজধানীসহ সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেয়া ৪৯৫টি মেশিনও কাজে লাগানো হবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে ঢাকার ২১টি পশুরহাটে অন্তত দুটি করে এবং ঢাকার বাইরে ৪১টি পশুরহাটে একটি করে বুথ বসাবে বিভিন্ন ব্যাংক। যেখানে দুটি করে জাল নোট শনাক্তকারী মেশিন থাকবে। এসব বুথ থেকে যে কেউ বিনামূলে নোট পরীক্ষা করাতে পারবেন। তাছাড়া গত রোজার ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশের বড় মার্কেট ও বিপণিবিতানে দেয়া ১৩০টি মেশিন এবারও সক্রিয় থাকবে। ঈদের আগের রাত ১২টা পর্যন্ত এ সেবা দেয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, পশুহাটে জাল নোটের বিস্তার রোধে গোয়েন্দা তত্পরতা জোরদার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেশের ৯টি গোয়েন্দা উইংকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তাছাড়া জাল নোট সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে বিটিভিতে আসল নোটের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট সম্বলিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনের জন্য সরবরাহ করা হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে নতুন টাকার নোট: এবারের ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ রোববার থেকে এসব নতুন নোট বাজারে ছাড়া হবে। ব্যাংক থেকে একজন ব্যক্তি একবারে সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা নতুন নোট বদল করে নিতে পারবেন। যেখানে ২০ ও ১০ টাকার একটি করে, ৫ টাকার তিনটি ও ২ টাকার একটি করে বান্ডেল থাকবে। আর সাথে থাকবে একশ পিস করে ৫, ২ ও ১ টাকার কয়েন।

রাজধানীর লোকজনদের নতুন টাকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে চারটি ও ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২০টি শাখায় বিশেষ কাউন্টার খোলা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক বাদে আর যেসব ব্যাংকের শাখায় নতুন টাকা বদল করা যাবে সেগুলো হলো, জনতা ব্যাংকের আবদুল গনি রোড করপোরেট শাখা ও নিউমার্কেট শাখা, সোনালীর রমনা শাখা, অগ্রণীর এলিফ্যান্ট রোড শাখা, রূপালীর মহাখালী শাখা, প্রাইমের মালিবাগ ও মিরপুর শাখা, পূবালীর সদরঘাট শাখা, ন্যাশনালের যাত্রাবাড়ী শাখা, ইসলামী ব্যাংকের শ্যামলী শাখা, মার্কেন্টাইলের বনানী শাখা, সাউথইস্টের কাওরানবাজার শাখা, উত্তরার চকবাজার শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, এসআইবিএলের বসুন্ধরা সিটি মার্কেট শাখা, আইএফআইসির গুলশান শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটির মোহাম্মদপুর শাখা, ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা এবং ডাচ্-বাংলার দক্ষিণ খানের এসএমই অ্যান্ড কৃষি শাখা।

এছাড়া ঢাকার বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট শহরে পাঁচটি করে এবং বরিশাল, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে তিনটি করে বিশেষ কাউন্টার খোলা হবে। গত রোজার ঈদে ২২ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়ার প্রস্তুতি ছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তবে ঈদের আগের কর্মদিবস পর্যন্ত সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে গিয়েছিলো।