জমিতে জৈব সার ব্যবহারের পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার: রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে ফসলি জমিতে জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসাথে জমিতে সেচ প্রদানকালে বিদ্যুত ও পানির অপচয় রোধে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে কৃষকেরা রাসায়নিক সার বিশেষ করে ইউরিয়া সারের ওপর বেশি নির্ভরশীল। এসব রাসায়নিক সার ব্যবহারে জমির গুণাগুণ নষ্ট হয়। আমি কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে বলবো, আপনারা জমিতে অধিক পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করবেন না। এতে জমির উর্বরতা কমে যায়। এর পরিবর্তে জৈব সার তৈরি করুন। এ সার মাটির গুণাগুণ ঠিক রাখে। প্রয়োজনে জমির মাটি পরীক্ষা করে সে অনুযায়ী জৈব ও গুটি ইউরিয় সারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

বিদ্যুত ব্যবহারে কৃষকদের সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিদ্যুত সরবরাহ করছে। তবে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করতে হবে। পাশাপাশি সেচ প্রদানকালে পানির অপচয় রোধেও সচেতন হতে হবে। অনুষ্ঠানে কৃষিতে ১০ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ৩০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রদান করা হয়। গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ পদক, ৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রৌপ্য পদক এবং ১৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্রোঞ্জ পদকে ভূষিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক উপস্থিত ছিলেন। কৃষিতে নারীদের অবদানের জন্য বান্দরবানের মাসিং নু মার্মা, কৃষি গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মৎস্য চাষের জন্য কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মো. সামছুউদ্দিন (কালু), কৃষি সম্প্রসারণে অবদান রাখায় কিশোরগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছাইদুন্নেছা এবং কৃষি গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারকে স্বর্ণ পদক দেয়া হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণে অবদান রাখায় রংপুর ক্যান্টনমেন্টের জিওসি মেজর জেনারেল মো. সালাহ উদ্দিন মিয়াজী ও দিনাজপুরের ডা. মো. আনোয়ার হোসেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারে বিশেষ সাফল্যের জন্য ঝিনাইদহের মর্জিনা বেগম, কৃষক পর্যায়ে উচ্চ মানসম্পন্ন বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য খুলনার মো. আবু হানিফ মোড়ল, সামাজিক বনায়নের জন্য চট্টগ্রামের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি চাষের জন্য গাইবান্ধার আব্দুল গফুর এবং বাণিজ্যিকভিত্তিক খামার স্থাপনের জন্য চিটাগাং মেরিডিয়ান এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও নাটোরের মো. সেলিম রেজা রুপার পদক পেয়েছেন।

রংপুরের বাঘের বাজার লাইভলিহুড ফিল্ড স্কুল ও ওহিদ শেখ, সাতক্ষীরার ফরিদা পারভীন ও অল্পনা রানী মিস্ত্রী, কুমিল্লার ডা. মানবেন্দ্র নাথ সরকার, জাহেদুল হক ও মনজুর হোসেন,পাবনার আঁখি মনি কৃষি খামার ও হাফিজুর রহমান, নওগাঁর মো. সালাহ উদ্দিন উজ্জ্বল, যশোরের অঞ্জু সরকার, মৌলভীবাজারের হুমায়ুন কবীর,নীলফামারীর রাজেন্দ্র নাথ রায়, ফেনীর আজিজুল হক, ময়মনসিংহের ইন্তেখাবুল হামিদ, রাঙ্গামাটির জ্যোজিসার মহাস্থবির এবং বগুড়ার বেলাল হোসেন সরদার ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছেন।