চুয়াডাঙ্গা কুন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নয়ছয়

 

প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের  অভিযোগ

খাইরুজ্জামান সেতু: চুয়াডাঙ্গা কুন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ লোপাটের  অভিযোগ উঠেছে। তিনি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা উপকরণ, স্লিপ বরাদ্দ ও বিদ্যালয় রক্ষণাবেক্ষণের এক লাখ ৯৫ হাজার টাকার মধ্যে অধিকাংশ টাকা পকেটস্থ করেছেন। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি থেকে শুরু করে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ অভিযোগ করেছে।

অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে কুন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা উপকরণ ক্রয় বাবদ ৫ হাজার, স্লিপ বরাদ্দ ৪০ হাজার  ও বিদ্যালয় রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ দেড় লাখ মোট এক লাখ ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার।

সরেজমিন দেখা গেছে, ৫ হাজার টাকায় শিক্ষার্থীদের পোশাক তৈরি করে দেয়ার কথা, কিন্তু তা এ পর্যন্ত তাদের হাতে পৌঁছাইনি। যা তারা পেয়েছে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা হবে। আর স্লিপ বরাদ্দ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে কয়েকটা প্লাস্টিকের ঝুড়ি কেনা হয়েছে। আর দেড় লাখ টাকার মধ্যে কেবল স্কুলের কিছু জায়গায় সিমেন্ট লাগিয়ে মেরামত ও রঙ করা হয়েছে। অন্যান্য সামান্য কিছু কাজ হলেও অধিকাংশ টাকাই লোপাট করেছেন প্রধান শিক্ষক। গ্রামবাসী অভিযোগ করতে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দীন তাদের ওপর চড়াও হন। কমিটির সভা হয়েছে ১১ জুন। ওই সভায় কমিটির সদস্য নাসির উদ্দীন ও মতিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন না বলে তারা জানিয়েছেন। অথচ তাদের স্বাক্ষর জাল করেছেন প্রধান শিক্ষক।

কুন্দিপুর গ্রামের নূরুল ইসলাম ও ফারুক হোসেনসহ অনেকেই অভিন্ন ভাষায় জানান, আমাদের স্লিপ বরাদ্দ দিয়ে মালামাল ক্রয়ের কমিটিতে রাখলেও পরবর্তী আমাদের আর কিছু বলেনি। আমরা প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তোমাদের নাম কমিটি থেকে সরকার বাদ দিয়ে দিয়েছে। একজন অভিভাবক জানান, এই বিদ্যালয় মেরামতে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, আর বাকি টাকা কী হয়েছে প্রধান শিক্ষক বলতে পারবেন। ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নাসির উদ্দীন জানান স্লিপ কমিটি গঠনের দিন ছিলাম আর আমি কিছু জানি না। ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান জানান প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানা গেছে অফিস খরচ বাবদ ২০ হাজার ও প্রধান শিক্ষক ৩০ হাজারসহ ১ লাখ টাকার বিভিন্ন খাতে বিভিন্ন ব্যক্তিকে দিতে হয়েছে আর বাকি টাকার কাজ ধীরে ধীরে করবে বলে প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দীন। আমাদের কিছু না বলেই রং মিস্ত্রি নিয়ে রং করাচ্ছিলেন এ সময় আমি জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন লেবার বাবদ ১৪ হাজার টাকা আর বিভিন্ন উপকরণ বাবদ ১৮ হাজার টাকার তালিকা দিয়েছি। দুই বছর কমিটির বয়স এখনও পর্যন্ত মাসিক মিটিং হয়নি।

এ বিষয়ে কুন্দিপুর সরাকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দীন জানান, সভাপতি ও সহ-সভাপতি দুইজন মিলে সমস্ত কাজ করেছেন, আমার ভাউচার এনে দিয়েছে তা আমি জমা দিয়েছি। আর বাস্তবায়ন কমিটির মিটিঙে করা কারো স্বাক্ষর জাল নাই। স্লিপ বরাদ্দের টাকা সুষ্ঠভাবে কাজ করেছি। আর যে টাকা আছে তা দিয়ে ফ্যান কিনবো। ছুটির ভিতর বাকি কাজ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু হাসান জানান, স্লিপ বরাদ্দ কাজ আমরা এখনও পরিদর্শনে করা হয়নি। চলতি মাসের ২০ তারিখে যেতে পারি। আর বিদ্যালয় রক্ষণা-বেক্ষণের কাজ আমাদের শিক্ষা কমিটির প্রধান ছিলো উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ কমিটির সদস্য দেখে এসে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছে তারপর আমরা বিল দিয়েছি।