গাংনীতে মোবাইলে চাঁদা দাবি ও হেমায়েতপুরে বোমা হামলা চক্রের সদস্য জাহাঙ্গীর গ্রেফতার : জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

 

গাংনী প্রতিনিধি: জাহাঙ্গীর আলম ওরফে আলম নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত সোমবার দিবাগত রাতে মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মিনাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গাংনী থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সে ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে। মোবাইলে চাঁদা দাবি, চাঁদার দাবিতে হেমায়েতপুর ও ঝোড়পাড়া গ্রামে বোমা হামলার কথা স্বীকার করেছে জাহাঙ্গীর। একই সাথে ওই চক্রের মূলহোতাদের নামও পুলিশের কাছে জানিয়েছে সে।

গাংনী থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, উন্নত তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে চাঁদাবাজির সাথে জাহাঙ্গীরের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ। গত কয়েকদিন ধরে সে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান করার পর রাতে নিজ বাড়িতে পৌঁছুলে প্রযুক্তির মাধ্যমেই তা নিশ্চিত হয় পুলিশ। শুরু হয় তাকে গ্রেফতারের অভিযান। এসআই শংকর কুমার ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিজ বাড়ি থেকে জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপরে জাহাঙ্গীরের সহযোগী একই গ্রামের দাউদ হোসেনের ছেলে মিলনকে গ্রেফতারে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় মিলন। এ সময় তার বাড়ি থেকে দুটি দেশীয় অস্ত্র (রামদা) উদ্ধার করা হয়। জাহাঙ্গীরের নামে থানায় মামলা দায়ের পূর্বক আদালতে সোপর্দের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানায় পুলিশ। সে বেশ কয়েকটি মামলার সনদেহভাজন আসামি ছিলো।

এদিকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে চাঁদাবাজ ও বোমাবাজ চক্রের উঠতি সন্ত্রাসী ও তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে জাহাঙ্গীর।

তার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ওই চক্রের মূলহোতা গাংনী উপজেলার পার্শ্বর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার শালিকা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে এলাকার শীর্ষ মোবাইল সন্ত্রাসী লিখন। মিনাপাড়ার মিলন ও গ্রেফতারকৃত জাহাঙ্গীর মোবাইলফোনে চাঁদা আদায় করা যেতে পারে এমন ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে লিখনকে দিতো। লিখন মোবাইলে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা দাবির পর ওই ব্যক্তিদের আদ্যাপান্ত সব তথ্য জোগাড় করে দিতো তারা। এছাড়াও ওই দুজনসহ আরও কয়েকজন মিলে চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে ঝোড়পাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী ও হেমায়েতপুর গ্রামের হোসেন আলীর বাড়িতে বোমা হামলা চালায়। হোসেন আলীর দু ছেলে প্রবাসী। তাদের চাঁদা দাবির লক্ষ্য ছিলো প্রবাসী, ব্যবসায়ী ও উঠতি অর্থবিত্তশালী মানুষ। এভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই গাংনী ও আলমডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছে তারা।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, খুব অল্প সময়ের মধ্যে চাঁদাবাজদের চিহ্নিত ও জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। এ চক্রের মূলহোতা লিখন ও তার সহযোগী মিলনসহ অন্যদেরকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে পুলিশ।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঝোড়পাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী ও হেমায়েতপুর গ্রামের প্রবাসীর পিতা হোসেন আলীর মোবাইলে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অজ্ঞাত পরিচয়দানকারী সন্ত্রাসী। চাঁদা না পেয়ে দুই বাড়িতেই বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। চাঁদা দাবির মোবাইলের সূত্র ধরেই পুলিশ তাদের চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়।