কোটচাঁদপুর পৌর মেয়রের শ্বশুরসহ দুজন গ্রেফতার : মহেশপুর থানার ওসি ক্লোজড

সোনারতরী কোচ থেকে ছিনিয়ে নেয়া সাড়ে তিন কেজি সোনা উদ্ধার

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর শহর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কেজি ওজনের ৩০টি সোনার বার উদ্ধার করেছে পুলিশের বিশেষ টিম। ঘটনার সাথে জড়িত আশরাফুল আলম ওরফে পটলা (৪৭) ও হারুন অর রশিদ ওরফে মিলন (২৮) নামে দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপরদিকে মহেশপুর থানার ওসিকে ক্লোজ করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত হারুন অর রশিদ ওরফে মিলন কোটচাঁদপুর উপজেলার আদর্শপাড়া এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে। আশরাফুল আলম ওরফে পটলা কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জাহিদুল ইসলাম জিরের শ্বশুর। তিনি সোনারতরী পরিবহনের স্থানীয় ম্যানেজার।
পুলিশ উপরোক্ত তথ্য দিয়ে বলেছে, গত ৪ জানুয়ারি রাতে মহেশপুর উপজেলার কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের পুরন্দপুর নামকস্থানে সোনারতরী পরিবহন থেকে পাচার হওয়া সোনার বার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় একদল দুষ্কৃতি। এ ঘটনায় মহেশপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান বাদী হয়ে মামলা রুজু করেন। এ ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশের বিশেষ টিম গোপন খবরের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে পটলা ও মিলনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের কাছ থেকে ৩০ পিস সোনার বার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ৪৭ পিস সোনার বার ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে।
উলে¬খ্য, ৪ জানুয়ারি রাতে সোনারতরী পরিবহন থেকে ৬ কেজি ওজনের ৬৫ পিস সোনার বার ডাকাতি হলে ঘটনার সাথে পুলিশের কতিপয় সদস্যের যোগ সূত্র আছে মর্মেও খবর ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় একটি ডাকাতি মামলা হলে ওই মামলার আইও আনিসুর রহমান ও এসআই নাজমুল হক, কনস্টেবল আব্দুল গাফফার, আসাদুল হক, ইমরান হোসেন, মনিরুজ্জামান, এইচএম এরশাদ ও ওলিয়ার রহমানকে দায়িত্ব অবহেলার কারণে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। এ সোনা ডাকাতির ঘটনা নিয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়। পুলিশ কোটচাঁদপুরের চোরাচালান সিন্ডিকেটের গডফাদার পৌরসভার কাউন্সিলর রেজাউল পাঠানকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে সূত্রে জানা যায়। তাকে কোটচাঁদপুরের মেয়র জাহিদুল ইসলাম জিরের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। সূত্র জানায়, রেজাউল পাঠান পুলিশের কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার পরই ভারতে পালিয়ে গেছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার গাবতলী সোনারতরী কাউন্টার থেকে পরিবহনের ম্যানেজার আশরাফুল আলম ওরফে পটলাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কোটচাঁদপুর থেকে হারুন অর রশিদ ওরফে মিলনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের কাছ থেকে ৩ কেজি ৪শ’ গ্রাম ওজনের ৩০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান, ঘটনার মূল হোতা কোটচাঁদপুরের রেজাউল পাঠান। আটকের পর পটলার মোবাইল থেকে রেজাউল পাঠানকে অসংখ্যবার কল করার প্রমাণ মিলেছে।
এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০ জানুয়ারি মহেশপুর থানার ওসিকে কর্র্তব্যে অবহেলার কারণে খুলনা রেঞ্জে ক্লোজ করা হয়েছে। প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ওসি আহম্মেদ কবীর হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত রাতে তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়।