অপহরণের ৩ দিন পর বিএনপি কর্মী রবির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার

??????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????????

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আলম আশরাফ: চুয়াডাঙ্গায় রবিউল ইসলাম রবি নামের এক ব্যক্তির হাত-চোখ বাঁধা গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে সদর থানা পুলিশ সদর উপজেলার ভুলটিয়া কাঁচা রাস্তার ময়নাভাঙ্গার মাঠের রাস্তার ওপর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। রবিউল ইসলাম রবির বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নলভাঙ্গা গ্রামে।

নিহত রবিউলের পরিবারের সদস্যরা জানায়, রবিউল ইসলাম রবি ছেলে রানাসহ কয়েকজন গত মঙ্গলবার ঝিনাইদহ কোর্টে এমটি মামলার হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ঝিনাইদহের বিষয়খালী এলাকার লেবুতলা নামকস্থানে পৌঁছুলে অপর একটি মাইক্রোবাস তাদের বেরিকেড দিয়ে ৬-৭ জন তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। আজ (গতকাল) শুক্রবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা-বদরগঞ্জ সড়কের ভুলটিয়া কাঁচা রাস্তার ওপর রবির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় কৃষকরা পুলিশে খবর দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তার দু হাত গামছা দিয়ে পিঠমোড়া করে বাঁধা ছিলো। একইভাবে গামছা দিয়ে বাঁধা ছিলো তার মুখ। তার কপালে গুলি করার চিহ্ন রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার নলভাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রবির নামে (৪৬) থানায় হত্যা-গুমসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। তবে লাশ শনাক্তের সময় রবির ছেলে রানা বলেছে, তার পিতা বিএনপি কর্মী।

পুলিশ ও এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে কৃষকরা মাঠে কাজ করতে যাওয়ার পথে বদরগঞ্জ-গড়াইটুপি সড়কের ভুলটিয়া ময়নাভাঙ্গার মাঠে রাস্তার ওপর লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে পাঠায়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন জানান, সকালে ময়নাতলা মাঠের কৃষকরা কাজ করতে গেলে অজ্ঞাত ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করি এবং উদ্ধার করি। নিহত ব্যক্তির পরনে খয়েরি রঙের গ্যাবাডিং প্যান্ট, গায়ে পেস্ট কালারের চেক শার্ট ও পায়ে চামড়ার স্যান্ডেল রয়েছে। হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় লাশটি পাওয়া গেছে। কপালের বামপাশে একটি গুলি করে তাকে খুন করা হয়েছে। তবে কে বা কারা কী কারণে তাকে খুন করেছে তা প্রাথমিকভাবে বলতে পারেনি পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে লাশের পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পেরে লাশ শনাক্ত করেছে নিহত রবিউলের স্বজনরা। নিহত রবি ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার নলভাঙ্গা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি বিএনপির একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ। পেশায় রবি একজন সার-কীটনাশকের ব্যবসায়ীও ছিলেন।

নিহতের ছেলে রানা জানান, গত ১০ নভেম্বর ঝিনাইদহ আদালতে একটি মামলার হাজিরা দেয়ার পর বিকেলে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় ঝিনাইদহ সদরের তেঁতুলতলা নামকস্থান থেকে শাদা পোষাকে ৬/৭ ব্যক্তি অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মাইক্রোবাসযোগে তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। রানা আরো জানান, পিতাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হই। কিন্তু পুলিশ কোনো পাত্তা দেয়নি। এমনকি কালীগঞ্জ থানায় জিডি করতে গেলে ওসি আনোয়ার হোসেন জিডি নেননি।