রেকর্ডের​ পাতায় পাকিস্তানের রোমাঞ্চকর জয়

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ১৭১ রানের এ ইনিংসটা অনেক দিন মনে রাখবেন ইউনুস খান। সম্ভবত আজীবন। এ ইনিংসটা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসেও। এটাই যে পাকিস্তানকে এনে দিলো রোমাঞ্চকর এক জয়। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে তো বটেই, এশিয়াতেই যেকোনো দলের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। শ্রীলঙ্কাকে সাত উইকেট হারিয়ে ২-১-এ সিরিজ জিতলো পাকিস্তান। জিততে হলে চতুর্থ ইনিংসে ৩৭৭ রান করতে হতো পাকিস্তানকে। টেস্ট ক্রিকেটের এতো দীর্ঘ ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসের বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডই ছিলো মাত্র পাঁচটি। কিন্তু কঠিন সেই কাজটা কী অনায়াসেই করলো পাকিস্তান! চতুর্থ ইনিংসে যেকোনো জুটিতে পাকিস্তানের রেকর্ড ২৪২ রানের জুটি এনে দিয়েছে এ জয়। ইউনুসের সাথে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তরুণ শান মাসুদ। অথচ গতকাল পাকিস্তান ১৩ রানে হারিয়ে ফেলেছিলো ২ উইকেট। সেখান থেকেই মাত্রই পঞ্চম টেস্ট খেলতে নামা মাসুদকে নিয়ে দিনের পুরোটাই পার করে দেন ইউনুস। দুজনই গতকাল সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন। শেষ দিনে পাকিস্তানের দরকার ছিলো ১৪৭ রান। হাতে ৮ উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা, উইকেটে জমিয়ে ব্যাটিং করছেন দু সেঞ্চুরিয়ান।

দিনের একাদশ ওভারে ১২৫ রান করে মাসুদ স্টাম্পিঙের ফাঁদে পড়লে হয়তো আশায় বুক বেধেছিলো শ্রীলঙ্কা। তখনো পাকিস্তানের ১২২ রান দরকার। শেষ দিনের উইকেট কি নাটকীয় কিছু জমিয়ে রেখেছে? না, সেই সম্ভাবনা দ্রুতই উবে যেতে থাকে পাকিস্তানের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দু ব্যাটসম্যানের ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে ইউনুস-মিসবাহর ১২৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি পাকিস্তানকে অবিস্মরণীয় একটা জয় এনে দেয়। মিসবাহ অপরাজিত ছিলেন ৫৯ রানে। শ্রীলঙ্কা কিন্তু মরণপণ লড়াইয়ের জন্যই মাঠে নেমেছিলো। কিছুতেই রান বের করতে দিচ্ছিলো না পাকিস্তানকে। দিনের প্রথম বাউন্ডারিটি এসেছে দশম ওভারে, সেটিও ইউনুসের ব্যাটের কাণায় লেগে ফাঁকা স্লিপ দিয়ে বের হয়ে। এরপর মাসুদের সেই উইকেট। কিন্তু শীতলতম মস্তিষ্কের মিসবাহ, সাথে ধ্রুপদি ইউনুস জয়ের বন্দর আর পাকিস্তানের জাহাজের দূরত্ব ক্রমেই কমিয়ে আনেন। জয়সূচক রানটা মিসবাহর​​ ব্যাট থেকেই আসে, যেমনটা এসেছিলো শ্রীলঙ্কারই বিপক্ষে গত বছর শারজায় ৩০২ ​রান তাড়া করে জেতা ম্যাচটায়। পাকিস্তান তাদের ইতিহাসে তিনশোর বেশি রান তাড়া করে জিতলো এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বার। এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটি ভারতের। ২০০৮ সালে চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৮৭ করে জিতেছিলো ভারত। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে নিজের সপ্তম ম্যাচেই এমন স্মরণীয় জয় পেয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।