প্রফেসর ড. মাহাবুব হোসেন মেহেদীর আরো একটি সাফল্য

হারানো পা ফির পেয়েছে রায়হান

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা দুর্লভপুরের রায়হান বললেন, পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও যখন ক্ষতবিক্ষত পা কেটে শরীর থেকে বাদ দিতে হবে জানিয়ে দিলো, তখন চোখের সামনে ঘুরে ফিরে ভেসে উঠতে লাগলো দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য। একটি পা ছাড়াই জীবন কাটাতে হবে? পঙ্গুত্ব না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শরীর থেকে পা কেটে বাদ দিতে হয়নি। প্রফেসর ড. মাহবুব হোসেন মেহেদী দীর্ঘ প্রায় ১০ ঘণ্টা অপারেশন করে ক্ষতবিক্ষত পা শরীরের খণ্ডাংশ হতে দেননি। হতে হয়নি পঙ্গু।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার দুর্লভপুরের ইসলাম মালিতার ছেলে রায়হান (৩৫) বললেন, পেশায় আনসার। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা থেকে বাড়ি ফেরার পথে শ্যালোইঞ্জিনচালিত আলমসাধুর সাথে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে আছড়ে পড়ি। ডান পায়ের হাড় ভেঙে বেরিয়ে আসে। সে এক বীভৎস দৃশ্য। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার করেন। পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে থাকি। এক পর্যায়ে জানানো হয়, ডান পা কেটে শরীর থেকে বাদ দিতে হবে। হাড় মরে গেছে। পায়ের ক্ষতস্থানে পচনও দেখা দিয়েছে। এ কথা শুনে কি স্বাভাবিক থাকা যায়। আমার আপনজনেরাও হতাশ হলেন। হাল ছাড়লেন না। এক পর্যায়ে নেয়া হলো প্রফেসর ড. মাহাবুব হোসেন মেহেদীর নিকট। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করলেন। ডায়গোনসিস রিপোর্ট দেখে তিনি বললেন, পা কেটে বাদ দেয়ার আগে অপারেশনের মাধ্যমে চেষ্টা করা যেতে পারে। ডা. মেহেদীর এ কথায় নতুন স্বপ্ন জাগলো। অপারেশন হলো। শরীর থেকে পা কেটে বাদ দিতে হয়নি, এখন আমি প্রায় সুস্থ। শিগগিরই কর্মজীবনে ফিরতে পারবো বলে আশা করছি। চিকিৎসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা, সৃষ্টিকর্তার প্রতি অশেষ রহমতের শুকরিয়া।

আহত আনসার সদস্য রায়হানের চিকিৎসা দেয়ার বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার কৃতীসন্তান দেশের প্রখ্যাত অর্থোপেডিক সার্জন ট্রামা ও স্পাইন সার্জন ডা. মাহাবুব হোসেন মেহেদী বললেন, সকল প্রশংসা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার। দীর্ঘদিনের গবেষণার অংশ হিসেবেই এলিজার্ভ পদ্ধতিতে অপারশন করে ওকে সুস্থ করা সম্ভব হয়েছে। আমি আমার পিতা-মাতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি, আমি যেন আরো অনেকের জীবনে সুস্থতা এনে দিতে পারি সেজন্য সকলের নিকিট দোয়া প্রার্থনা করছি।