ঝিনাইদহে পেট্টোকেম কোম্পানির বীজে চাষিরা বিপাকে : শতাধিক বিঘা জমির ভুট্টা শেষ

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আলামপুর ২ নং কলোনির মাঠে প্রায় অর্ধশতাধিক চাষি ভুট্টা চাষ করে বিপাকে পড়েছে। জমিতে ভুট্টার চারা গজালেও জমি অধিকাংশ ভুট্টা গাছ মাথা মোটা হয়ে মোড়ক ধরেছে। গত রোববার সকালে খবর পেয়ে এ প্রতিবেদক আলামপুর ২ নং কলোনির মাঠে যাওয়া মাত্র ভুট্টা চাষিরা ঘিরে ধরে অভিযোগ করে বলেন-আমরা ‘পেট্টোকেম’ কোম্পানির  পায়োনিয়ার ৩৩ ভি ৯৬  জাতের ভুট্টার বীজ কিনে এলাকার মাঠে শতাধিক বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে। ভুট্টা বীজের চারা গজালেও গাছগুলো এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতায় আসার পর গাছের মাথা মোটা হয়ে গাছের  ওপর অংশের পাতা ছোট হয়ে কুকড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা প্রতিটি ক্ষেতের অধিকাংশ গাছে দেখা দিয়েছে। ওই মাঠের চাষি আব্দুল কাদের বলেন- আমি তিন বিঘা জামিতে ‘পেট্টোকেম’ কোম্পানির পায়োনিয়ার ৩৩ ভি ৯৬ জাতের ভুট্টার বীজ রোপণ করেছি। জমিতে চারা গজালেও  ভুট্টা গাছে মোচা আসার আগেই জমির অধিকাংশ গাছ কুকড়ে ও মাথা মোটা হয়ে গেছে।

এ অবস্থায় আমরা ভুট্টা ক্ষেত নিয়ে বিপদের  মধ্যে আছি। ভুট্টা চাষি রুহুল আমিন দেড় বিঘা ও আব্দুল আড়াই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। এ দুই চাষি অভিন্ন বক্তব্যে বলেন- আমাদের এ মাঠে প্রায় ৫০ চাষি ‘পেট্টোকেম’ কোম্পানির পায়োনিয়ার ৩৩ ভি ৯৬ জাতের ভুট্টার চাষ করেছে। আমাদের প্রত্যেককেরি জমিতে ভুট্টার অধিকাংশ গাছ কুকড়ে ও মাথা মোটা হয়ে মারা যাচ্ছে। কিন্তু পাশাপাশি কিছু কিছু চাষি অন্য কোম্পানির ভুট্টার বীজ বোপণ করেছে তাদের ভুট্টা গাছ ক্ষতিগ্র্সত হয়নি। বরং তাদের ভুট্টা গাছ খুবই ভাল হয়েছে।

অভিযোগকারীরা বলেন, আমরা গরিব অসহায় মানুষ। আমাদের মধ্যে অনেকেই এনজিও থেকে লোন নিয়ে কেউ কেউ জমি লিজ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছি, ভুট্টা বিক্রি করে লোন শোধ করবো এই শর্তে। অথচ আমাদের ভুট্টা ক্ষেত ২/৩ মাস পরিচর্যা করে এখন দেখছি ক্ষেতে ভুট্টা হবে না। আমরা এখন ঋণের টাকা পরিশোধ করবো কী করে।

এ ব্যাপারে পেট্টোকেম কোম্পানির এ অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিবিদ সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি সাংবাদিককে বলেন- ভুট্টা গাছ দেখে মনে হচ্ছে ড্রাফট মোজাইক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বিক্রয় প্রতিনিধিদের বীজ রক্ষণাবেক্ষণে এমনটি হতে পারে। তবে তিনি তার ওপর মহলকে বিষয়টি জানিয়েছেন বলে জানান।

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আবু তালহা বলেন-আমি খবর পেয়ে ক্ষতিস্ত ভুট্টার জমিতে গিয়েছিলাম। এটি ভাইরাসজনিত কারণে অথবা পুরোনো বীজ বোপণ করার কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে। সে যাই হোক বীজের কারণে এমনটি হয়েছে। আমি এ বীজের ডিলারকে বলেছি পেট্টোকেম কোম্পানিকে জানিয়ে দিতে তারা অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে এসে দাঁড়ায়। তা না হলে ওই পেট্টোকেম কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবো।