সাহিত্য সাময়িকী খেয়া:

অভিমান

-মোহনা হাসান প্রেমা

বলবো না কথা

না না না

একদম না একেবারে না

আলোতেও না আঁধারেও না

কখন থেকে চেয়ে আছি পথে

খাবার ঠাণ্ডা হলো

এত রাতে এসে বলছো আমায়

প্লিজ দরজাটা খোল

শুনবো না কিছু

না না না

একদম না একেবারে না

আদরেও না ক্ষমাতেও না

কাজকেই যদি এত ভালোবাসো

কেন এলে তবে ফিরে

বোঝনি কখনো আমি শুধু একা

শত মানুষের ভীড়ে

মানবো না আমি

না না না

একদম না একেবারে না

প্রেমেতেও না ফুলেতেও না

ভালোবাসা সব পালিয়েছে দূরে

ঠিক বুঝে গেছি আমি

বিয়ের পরে কাজ শুধু কাজ

বউ থেকে হলো দামী

বুঝবোনা মন

না না না

একদম না একেবারে না

সাজাতেও না আবেগেও না

সখ করে কত সেজে বসে থাকি

তোমায় দেখাবো বলে

খোপার গোলাপ কেঁদে মরে রোজ

কাজল ডুবেছে জলে

বলবো না কথা, শুনবো না কিছু

মানবো না আমি, বুঝবো না মন

আজ সারারাত খুলবো না দ্বার

বারান্দাতেই থাকো

গলবে না মন যতই আমায়

আদর সোহাগে ডাকো

এই শোনো এত শব্দ কিসের

কাশছো নাকি তুমি

দাঁড়াও দাঁড়াও খুঁজছি চাবি

এইতো এলাম আমি।

 

 


সমাধি লিপি

-সৈকত সাগর

একদা মৃত্যু আমাকে ছুয়েঁ যাবে তার নীল হাতে,

কোনো বিজন মাঠের প্রান্তে রবে মম দেহ

সহস্রদিন-ঘাসেরা থাকিবে জেপে কষ্ট আঘাতে,

তবুও সমাহিত হবে না দেহ, আসিবে না কেহ,

নিতে খবর আমার জোরবার বাসি শবটাকে;

অতঃপর উগ্র কাকেদের নেমে ঝাঁকে ঝাঁকে

টেনে হেঁচড়ে কলহে আপ্লুত হুঙ্কার করে খাবে

 

ঘাসের বক্ষে চুম্বনে রত আমার মুখ গহ্বরে;

বক্ষস্থল-হৃদপিণ্ড-পেশি একে একে হবে ক্ষয়,

মাছিরা করিবে ভন ভন উচ্ছিষ্ট আস্যে, শরীরে,

অনন্তর থেমে যাবে সব ঝংকার, সঙ্গীত লয়;

ছোঁ মেরে চোখ দুটি ও কাক নিয়ে যাবে কোনোক্ষণে

শেষ হবে….আয়োজন সৈকত সাগরের জীবনে।

 

 

 

সত্যের কথা বলি

-সামসুন্নাহার যুথি

যে কলম সত্যের কথা বলে না

সে কলম আমি ধরি না।

যে পুলিশ ঘুষের টাকায় পকেট ভরায়

বাচ্চা বউয়ের সখ যে মেটায়,

তার টাকাতে ফেলি আমি থুথু।

 

যে বিদ্যা অর্জন করে

চাকরি পেতে ঘুষের সাথে

করতে হয় আপস।

আমি সে চাকরি না করে,

ফুটপাতে বসে বিক্রি করবো

মানুষের পায়ের জঞ্জাল মোছা পাপোষ।

যে শিক্ষিত রাক্ষস মানুষের মনের

স্বপ্ন নিয়ে করে খেলা।

অনেক পেয়েছে তবু ভিখারিনী

অভাব তাহার মেটে না।

আমি তার মগজ পুশ করে দেব

সালাম, রফিক, বরকতের রক্ত,

আর দুর্নীতিবাজ কুৎসিত মনের

শিয়াল শকুন ভক্ত।

 

আমি জলোচ্ছ্বাস হয়ে

উড়িয়ে নেবো মানুষের মনের মিথ্যা,

পৃথিবী ভরবে আলোয় আলোয়

সবাই পাবে সত্য, নীতির শিক্ষা।

 

 

কবির স্বপ্ন

-জোয়াদ আলী

বর্তমানে শিশুরা সব ভবিষ্যতের রত্ন,

একি মনে কর সবাই তাদের প্রতি যত্ন।

লেখাপড়া শিখে তারা হবে কর্মজীবি,

দেশের জন্য হবে পুণ্য দেখতে সবাই পাবি।

জজ ব্যারিস্টার হবে আরো কতো হাকিম,

আল্লাহ রাজি শহিদ গাজি তারাই হবে মোমিন।

ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার কতো হবে তারা শত শত,

গরিব-দুঃখী করবে সুখি সেবা তাদের কর্ম,

এই না দেশে সেই না ছেলে আর কি হবে জন্ম।

 

 

 

শাপলা ফুলের দেশে

-আহাদ আলী মোল্লা

 

শাপলা ফুলের দেশে আমার বাড়ি

বনবাদাড়ে পাখিরা গায় গান

খেঁজুর গাছে ঝোলে রসের হাড়ি

গাঁয়ের মাঠে বরজ ভরা পান।

 

হিজল তমাল তাল সেগুনের বনে

বুনো হাওয়া একটানা খায় দোল

পুলক জাগে ফুল ফসলের মনে

যায় বয়ে যায় আনন্দ হিল্লোল।

 

ঝোপে-ঝোড়ে জোনাকিরা জ্বলে

চাঁদের আলো গড়াগড়ি খায়

সূর্য-মেঘে লুকোচুরি চলে

নায়ের মাঝি ভাটিয়ালি গায়।

 

ছয়টি ঋতু আসে ঘুরে ফিরে

সাগর নদীর নেইতো চলার শেষ

বক সারসের মেলা নদীর তীরে

এটা আমার সোনার বাংলাদেশ।

 

 

 

আমার তুমি

-সঞ্জীব কুমার রায়

তুমি ছাড়া এত আপন

আমার আর আছে কে বলো

তুমি ছাড়া সারা জীবন

থাকবে আর কাছে কে বলো

তোমাতেই সপেছি জীবনের সব

তুমি এই হৃদয়ে মিষ্টি অনুভব ।

আলতো ছোঁয়ায় কষ্ট যত তুমি ভোলাও

দোদুল দোলায় সারাক্ষণ তুমি দোলাও

এই বুকে প্রাণ তুমি যে

প্রাণটা ছাড়া বাঁচে কে বলো

তোমাতেই সপেছি জীবনের সব

তুমি এই হৃদয়ে মিষ্টি অনুভব ।

হাজার স্বপ্নের রঙধনু তুমি সাজাও

মায়াবী সুরের বাঁশি বুকে তুমি বাজাও

তুমি ছাড়া এত ফুল যে

ফোটাবে মনের গাছে কে বলো

তোমাতেই সপেছি জীবনের সব

তুমি এই হৃদয়ে মিষ্টি অনুভব।

 

 

‌মাথাভাঙ্গা

-মো. আফরোজ আলী

সুন্দর এ ধরনীর মাঝে

চুয়াডাঙ্গা জেলায়,

মাথাভাঙ্গা জন্ম সেতো

নিত্য খবর বিলায়।

 

যায় মাস যায় বছর

এমনি প্রতিদিন,

সত্য ন্যায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ

অন্যায়ে আপসহীন।

 

মাথাভাঙ্গা নদীর নামে

পত্রিকাটির নাম,

দেশজুড়ে তার সফলতা

শহর থেকে গ্রাম।

 

চায়ের দোকান, মুদিদোকান

অফিস আদালত মোড়ে,

সবাই যেন উতাল মনে

মাথাভাঙ্গা পড়ে।

 

ঘটে যাওয়া প্রতিদিন

কতশত ঘটনা,

সত্যের কথাগুলোই

করে খবর রচনা।

 

খবরের খোঁজে কলম সৈনিক

মানে না রোদ বৃষ্টি,

আহাদ ভাইয়ের মজার ছড়া

কাড়ে সবার দৃষ্টি।

 

এ সংখ্যাতে লিখব না আর

দিলাম টেনে ইতি,

মাথাভাঙ্গার সকল পাঠকের

রইল আমার প্রীতি।

 

 

 

সবুজের ঢেউ

-শরীফ সাথী

আমার দেশের আকাশ তলে

চাঁদ সূর্য তারা জ্বলে,

মেঘলা দিনে মেঘ বৃষ্টি

খেলে খেলা দলে দলে।

আমার দেশের এই কমলে

সবুজ ডালে স্বর্ণ ফলে,

নদীর বুকে মায়ার টানে

আপন ধারায় ঝরনা চলে।

 

আমার দেশের  মিঠা জলে

নানান মাছে গল্প বলে,

টেংরা পুটি চিংড়ি কাতল

ছন্দ সুরে অনর্গলে।

 

আমার দেশের পাখির দলে

বৃক্ষ ডালে ছন্দ তোলে,

বাংলা গায়ের শ্যামল কোলে

সবুজের ঢেউ, কেউ কী ভোলে?

 

 

 

আমার এ বাংল

-মোহাম্মদ সাদিমুল ইসলাম

 

মাঠের পর মাঠ চলেছে

গাঁয়ের পর গাঁ,

কতো সুন্দর দেখতেরে ভাই

আমার এ বাংলা।

 

সবুজ শ্যামল বৃক্ষরাশি

ভারি চমৎকার,

বৃক্ষ সবুজ পাতা যেন

সোনার অলঙ্কার।

 

বিলে ঝিলে শাপলা শালুক

পদ্ম কলমি লতা,

রূপের ঝিলিক ছড়িয়ে দেয়

এরা যে রূপ দাতা।

 

মাঠের পর মাঠ চলেছে

গাঁয়ের পর গাঁ,

কত সুন্দর দেখতেরে ভাই

আমার এ বাংলা।