দর্শনা রেলইয়ার্ডে আবারও লুটেরাচক্রের হানা : ওয়াগন থেকে লুটপাট

নিরাপত্তাদের হাতে আটক দুজনকে নিয়ে গড়িমসি : প্রতিবাদ করায় স্বামী-স্ত্রীকে রক্তাক্ত জখম

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা রেলইয়ার্ডে আবারও লুটেরাচক্র হানা চালিয়েছে। এলাকার চিহ্নিত লুটেরাচক্রের সদস্যরা ওয়াগন থেকে মালামাল লুটপাট করেছে। লুটের মালামালসহ রেলওয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে আটক হয়েছে অভিযুক্ত দুজন। তাদের নিয়ে গড়িমসির প্রতিবাদ করায় স্বামী-স্ত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছেন নিরাপত্তা বিভাগের ইন্সপেক্টরসহ সদস্যরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত পোল্ট্রি ফিডের একটি ৱ্যাক দর্শনা রেলইয়ার্ডে পৌঁছায়। দর্শনা রেলইয়ার্ডে রক্ষিত থাকা অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে চিহ্নিত লুটেরাচক্র হানা দেয় ইয়ার্ডে। অভিযোগ উঠেছে, লুটেরাচক্র প্রায় অর্ধশত বস্তা পোল্ট্রি ফিড লুট করে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায়। রাতেই চুরিকৃত মালামালের মধ্যে ছয় বস্তা পোল্ট্রি ফিডসহ দর্শনা আইসি পুলিশের টহল দলের হাতে ধরা পড়ে দর্শনা পৌর এলাকার মোবারকপাড়ার পিয়ার আলীর ছেলে শাহারুল ও শান্তিপাড়ার পিরুর ছেলে মামুন। এ সময় লুটেরাচক্রের কয়েকজন সদস্য পালিয়ে রক্ষা পায়। পুলিশ গ্রেফতারকৃত শাহারুল ও মামুনকে ওই রাতেই উদ্ধারকৃত মালামালসহ দর্শনা রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগে সোপর্দ করে। গুঞ্জন উঠেছে, আটককৃত দুজনকে ছাড়ানোর জন্য সকাল থেকে শুরু হয় দেনদরবার। বিকেল গড়িয়ে গেলেও দরকষাকষির চূড়ান্ত পর্যায়ে না পৌঁছুনের ফলেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে নিরাপত্তা বিভাগ। এ বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে কেউ কেউ প্রতিবাদ শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে দর্শনা রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের ইনচার্জ তৌফিক কয়েকজন নিরাপত্তা সদস্যকে সাথে নিয়ে দর্শনা ফ্রেন্ডস আইডিয়াল ক্লাবের সামনে আসেন। সেখানে ইসলাম বাজারপাড়ার আলাউদ্দিন আলীর ছেলে প্রতিবাদকারীদের মধ্যে একজন মহিদুল ইসলামকে বেধড়ক পিটিয়েছে। এ সময় তার স্ত্রী রোকসানা এগিয়ে এলে তাকেও মারধর করা হয়। মহিদুল ও রোকসানাকে পিটিয়ে ফেলে রেখে যান নিরাপত্তকর্মীরা। এদের মধ্যে রোকসানার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় নিরাপত্তা ইনচার্জ তৌফিকের সাথে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আটককৃত দু আসামিকে আগের মামলায় পোড়াদহ রেলওয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া মহিদুল ও তার স্ত্রীকে মারধরের ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝির কারণেই হয়েছে, যা মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছে। এদিকে নিরাপত্তা বিভাগের ইনচার্জসহ সদস্যদের এহনক কর্মকাণ্ডে এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছে এলাকাবাসী।