পছন্দের মাপকাঠি অর্থ : পদে পদে মেধার অবমূল্যায়ন

পছন্দের মাপকাঠি যদি অর্থ হয় তাহলে যোগ্য প্রার্থীর হদিস মিলবে কি? মিলবে না, মিলছে না। বিশেষ করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার এখন প্রধান মাপকাঠির নাম অর্থ। মেধা নয়, অর্থদানের দৌড়ে যে এগিয়ে তাকেই যখন নির্বাচিত করা  হয়, হচ্ছে- তখন বিদ্যালয়গুলোতে মেধাবী শিক্ষক মিলবে কীভাবে? মেধাবী দক্ষ শিক্ষক না থাকলে মেধাবী শিক্ষার্থী আসবে কোত্থেকে?

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ মানেই কাড়ি কাড়ি অর্থের খেলা। অর্থবাণিজ্য ছাড়া নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকলে অবশ্যই মেধার মূল্যায়ন হতো। দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক সমাজের আদর্শ। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, সমাজে নীতি নৈতিকতার চরম স্খলন ঘটেছে। কেন? আড়ালে সুক্ষ্মভাবে আড়ালে রয়েছে মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষকের অভাব। দিন দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকের আকাল যে পদে পদে পরিলক্ষিত হচ্ছে তা শিক্ষানুরাগীমাত্রই স্বীকার করবেন। চলমান এ অবস্থা থেকে ফিরতে হবে, নিয়মনীতির ধারায়। কিন্তু কীভাবে সম্ভব? দুর্নীতি যখন চক্রবৃদ্ধি হারে ছড়াচ্ছে। অনিয়মের অঘোষিত প্রতিযোগিতা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার দরুণ অনিয়মের বিরুদ্ধে শক্ত হয়ে দাঁড়ানোও এখন কঠিন। মেধার প্রকৃত মূল্যায়ন না হওয়ার কারণে মেধা ঝরে পড়ছে। বাড়ছে হতাশা। তার কুফল পড়ছে সমাজে। অভাগা এ সমাজ হরেক রকম কুফলের ভারে শুধু দুর্বলই হয়ে পড়ছে না, ভেঙে পড়ছে মেরুদণ্ড। গতকালও দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় নিয়োগ পরীক্ষার আগেই পছন্দের প্রার্থীকে নেয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিকার কি মিলছে?

আর যাই হোক, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থবাণিজ্যকে মেনে নেয়া যায় না। মেধা ও দক্ষতার প্রকৃত মাপকাঠি দিয়ে মেপেই নিয়োগ নিশ্চিত করার পথে হাঁটতে হবে। আর এ জন্য নিয়োগ পদ্ধতিটাই পাল্টাতে হবে। যে ক’জনকে নিয়োগ কমিটিতে রাখা হচ্ছে তারা ভিন্নমেরুর হলেও তাদের অধিকাংশই অনিয়মের সাথে আপস করছেন, তা না হলে পছন্দের মাপকাঠি অর্থ কেন? দূর হোক এ দুর্নীতি।